মানুষের জীবনে এমন সময় আসে যখন মানুষ আকুল হয়ে ঈশ্বরের খোঁজ করে। এবং সেইজন্য সে মহাজনের পথ অনুসারে কাজ করে যায় । গুরুর খোঁজে বেরিয়ে পরে, গুরু সাক্ষাৎ লাভ করে, এবং দীক্ষা গ্রহণ করে। গুরুর উপদেশ অনুযায়ী কাজ করে।
কিন্তু আত্মানুসন্ধান ব্যতীত বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যায় না। দুর্গম এই পথ। অবসর সময় কিছুক্ষন গুরুমন্ত্র জপ্ করলাম, তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। গুরুলাভের জন্য চেষ্টা করতে হবে না। নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে পারলে গুরু দর্শন পাওয়া যাবে। সুতরাং উপযুক্ত হওয়া বা নিজেকে উপযুক্ত করা অনেক বেশি গুরুত্ত্বপূর্ন। এবং তার জন্য বিশেষ চেষ্টা আবশ্যক। জলের দ্বারা অন্তরাত্মা শুদ্ধ হয় না। মালা পড়লে সাধু হওয়া যায় না। তিলক লাগালে দেহশুদ্ধি হয় না। এবং এই সব করে আর যাই হোক আধ্যাত্মিক উন্নতি করা সম্ভব সম্ভব নয়।
কিন্তু আত্মানুসন্ধান ব্যতীত বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যায় না। দুর্গম এই পথ। অবসর সময় কিছুক্ষন গুরুমন্ত্র জপ্ করলাম, তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। গুরুলাভের জন্য চেষ্টা করতে হবে না। নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে পারলে গুরু দর্শন পাওয়া যাবে। সুতরাং উপযুক্ত হওয়া বা নিজেকে উপযুক্ত করা অনেক বেশি গুরুত্ত্বপূর্ন। এবং তার জন্য বিশেষ চেষ্টা আবশ্যক। জলের দ্বারা অন্তরাত্মা শুদ্ধ হয় না। মালা পড়লে সাধু হওয়া যায় না। তিলক লাগালে দেহশুদ্ধি হয় না। এবং এই সব করে আর যাই হোক আধ্যাত্মিক উন্নতি করা সম্ভব সম্ভব নয়।
আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে গেলে, চারটি জিনিসের অবশ্য প্রয়োজন।
প্রথমতঃ সৎ ও অসৎ এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে। যা নিত্য, চিরস্থায়ী, আধ্যাত্মিক জগতে সেটাই একমাত্র সৎ বস্তু। আর সব কিছু অসৎ এবং তাকে অগ্রাহ্য করতে হবে। আত্মার উন্নতি করতে গেলে চরিত্র শোধন ও বস্তুর স্বরূপ দর্শন অবশ্য প্রয়োজন। নিজেকে সংস্কারমুক্ত হতে হবে।সর্বদা এই সৎ বস্তুর সেবা করতে হবে। অন্য সব কিছু অগ্রাহ্য করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ : অনাসক্তি। কামনার স্রোতে নিজেকে ভাসালে চলবে না। সংসারে স্নেহ, মমতা, স্বার্থপরতা বন্ধন এগুলো থাকবে, কিন্তু মনকে সেখান থেকে ঘুরিয়ে প্রবৃত্তিকে পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের চিরাচরিত ধারণা, যা আমাদের ব্রাহ্মণ্যবাদ সমাজ শিখিয়েছে, সেগুলোকে পরিত্যাগ করে,অনুভূতির দ্বারা সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রেমের আকর পরম-আত্মা, পরম-ঈশ্বর। আমাদের স্বার্থ-জড়িত যে প্রেম যার মুলে জৈবিক ধর্ম ধারণ করে আছে, তারও উৎপত্তি ঈশ্বর থেকে। পতি-পত্নীর যে প্রেম তারও উৎপত্তি ঈশ্বর থেকে। আমাদের পরস্পরের মধ্যে যে ভগবান আছেন, এই দাম্পত্য প্রেম যেন সেই উদ্দেশ্যে ধাবিত হয়। প্রত্যেক ব্যক্তির ভিতরে যে অন্তর-আত্মা আছে আমাদের তথাকথিত প্রেম যেন সেই বস্তুর দিকে প্রসারিত হয়। বার বার চেষ্টা করে, ক্রমশঃ কামনার বস্তুকে উপেক্ষা করে, বস্তুর মধ্যে যে পরমধন আছে, সেই দিকে ধাবিত হতে হবে। ভগবানকে লাভ করতে গিয়ে, ভগবানের তৈরি বস্তুতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। আর সেই পবিত্র প্রেমের বন্ধনে জগৎকে বাঁধতে পারলেই ভগবত প্রাপ্তি। আর তার জন্য প্রেমের মধ্যে যে স্বার্থের সন্মন্ধ সেটাকে মুক্তি দিতে হবে।
তৃতীয়তঃ : শারীরিক সংযম, চিত্ত সংযম, বিশ্বাস, ধৈর্য্য এগুলোই মানুষের সম্পদ। এই সম্পদের বৃদ্ধি করতে হবে। মনকে প্রিয় বস্তুর দিকে ধাবিত হতে না দিয়ে, শ্রেয় বস্তুর দিকে লাগামের সাহায্য নিয়ে যেতে হবে। আমাদের কর্মকে সুনিয়ন্ত্রিত করতে হবে। সহ্য করতে শিখতে হবে। শতশত দুঃখেও অবিচল থাকতে হবে। মনে দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে এই দুঃখই আমাকে ভগবৎ অনুভূতি এনে দেবে।
চতুর্থতঃ : ভগবানের সাথে মিলিত হবার জন্য, নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।আধ্যাত্মিক জীবনে পূর্ন ব্যাকুলতা ছাড়া এগুবার কোনো উপায় নেই। একথা সদা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, সর্ব্বভূতে ভগবান আছেন, অতএব সর্বভূতে সমবুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে।
দীক্ষা নিতে গেলে আমাদের এই চারটি সোপান পেরিয়ে যেতে হবে। যারা এটাকে অতিক্রম করতে পেরেছেন, গুরুদেব স্বয়ং তার কাছে উপস্থিত হন। উপযুক্ত গুরুকে খুঁজতে হয় না। উপযুক্ত গুরু উপযুক্ত শিষ্যকে খোঁজেন, তাকে শিষ্য বানাবার জন্য নয়, তাকে প্রকৃত গুরু বানাবার জন্য।
রামকৃষ্ণকে গুরু খুঁজতে হয় নি। একাধিক গুরু তার কাছে এসেছিলো তাকে শিষ্য হিসেবে পেতে। রামকৃষ্ণ কিন্তু শিষ্য হয় নি, তিনি আসলে গুরু হয়েছিলেন। সন্দেহ, কুসংস্কার, এবং পৃথক-ভাব পরিত্যাগ করতে পারলে, গুরুকে আপনজন মনে হয়। শত্রু, মিত্র, আত্মীয়,অনাত্মীয়, আপন-পর সবার মধ্যেই আমি আছি। কেবল দেহগুলো পৃথক, এই ভাব যখন মনে স্থায়ী হয়, তখন উপযুক্ত দীক্ষা হয়। একটা কথা মনে রাখবেন, ঈশ্বর সর্বত্র আছেন, কিন্তু গুরুদেবকে সর্বত্র পাওয়া যায় না, গুরু সুদুর্লভ। সূক্ষ্ম দেহের উন্নতির দ্বারা যিনি সুখে-দুঃখে অবিচল, মান-অপমান বোধ বর্জিত,, প্রিয় বা অপ্রিয় বলে যার কাছে কিছু নেই। যিনি সব সংগ ত্যাগ করেছেন, তাকে শিষ্য করবার জন্য গুরুদেবরা সর্বস্য দিয়ে থাকেন। তিনিই উপযুক্ত শিষ্য। সুতরাং শিষ্য হওয়াই সাধনা।
ওঁং শান্তি শান্তি শান্তিঃ।
সমাপ্ত
দ্বিতীয়তঃ : অনাসক্তি। কামনার স্রোতে নিজেকে ভাসালে চলবে না। সংসারে স্নেহ, মমতা, স্বার্থপরতা বন্ধন এগুলো থাকবে, কিন্তু মনকে সেখান থেকে ঘুরিয়ে প্রবৃত্তিকে পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের চিরাচরিত ধারণা, যা আমাদের ব্রাহ্মণ্যবাদ সমাজ শিখিয়েছে, সেগুলোকে পরিত্যাগ করে,অনুভূতির দ্বারা সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রেমের আকর পরম-আত্মা, পরম-ঈশ্বর। আমাদের স্বার্থ-জড়িত যে প্রেম যার মুলে জৈবিক ধর্ম ধারণ করে আছে, তারও উৎপত্তি ঈশ্বর থেকে। পতি-পত্নীর যে প্রেম তারও উৎপত্তি ঈশ্বর থেকে। আমাদের পরস্পরের মধ্যে যে ভগবান আছেন, এই দাম্পত্য প্রেম যেন সেই উদ্দেশ্যে ধাবিত হয়। প্রত্যেক ব্যক্তির ভিতরে যে অন্তর-আত্মা আছে আমাদের তথাকথিত প্রেম যেন সেই বস্তুর দিকে প্রসারিত হয়। বার বার চেষ্টা করে, ক্রমশঃ কামনার বস্তুকে উপেক্ষা করে, বস্তুর মধ্যে যে পরমধন আছে, সেই দিকে ধাবিত হতে হবে। ভগবানকে লাভ করতে গিয়ে, ভগবানের তৈরি বস্তুতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। আর সেই পবিত্র প্রেমের বন্ধনে জগৎকে বাঁধতে পারলেই ভগবত প্রাপ্তি। আর তার জন্য প্রেমের মধ্যে যে স্বার্থের সন্মন্ধ সেটাকে মুক্তি দিতে হবে।
তৃতীয়তঃ : শারীরিক সংযম, চিত্ত সংযম, বিশ্বাস, ধৈর্য্য এগুলোই মানুষের সম্পদ। এই সম্পদের বৃদ্ধি করতে হবে। মনকে প্রিয় বস্তুর দিকে ধাবিত হতে না দিয়ে, শ্রেয় বস্তুর দিকে লাগামের সাহায্য নিয়ে যেতে হবে। আমাদের কর্মকে সুনিয়ন্ত্রিত করতে হবে। সহ্য করতে শিখতে হবে। শতশত দুঃখেও অবিচল থাকতে হবে। মনে দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে এই দুঃখই আমাকে ভগবৎ অনুভূতি এনে দেবে।
চতুর্থতঃ : ভগবানের সাথে মিলিত হবার জন্য, নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।আধ্যাত্মিক জীবনে পূর্ন ব্যাকুলতা ছাড়া এগুবার কোনো উপায় নেই। একথা সদা সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, সর্ব্বভূতে ভগবান আছেন, অতএব সর্বভূতে সমবুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে।
দীক্ষা নিতে গেলে আমাদের এই চারটি সোপান পেরিয়ে যেতে হবে। যারা এটাকে অতিক্রম করতে পেরেছেন, গুরুদেব স্বয়ং তার কাছে উপস্থিত হন। উপযুক্ত গুরুকে খুঁজতে হয় না। উপযুক্ত গুরু উপযুক্ত শিষ্যকে খোঁজেন, তাকে শিষ্য বানাবার জন্য নয়, তাকে প্রকৃত গুরু বানাবার জন্য।
রামকৃষ্ণকে গুরু খুঁজতে হয় নি। একাধিক গুরু তার কাছে এসেছিলো তাকে শিষ্য হিসেবে পেতে। রামকৃষ্ণ কিন্তু শিষ্য হয় নি, তিনি আসলে গুরু হয়েছিলেন। সন্দেহ, কুসংস্কার, এবং পৃথক-ভাব পরিত্যাগ করতে পারলে, গুরুকে আপনজন মনে হয়। শত্রু, মিত্র, আত্মীয়,অনাত্মীয়, আপন-পর সবার মধ্যেই আমি আছি। কেবল দেহগুলো পৃথক, এই ভাব যখন মনে স্থায়ী হয়, তখন উপযুক্ত দীক্ষা হয়। একটা কথা মনে রাখবেন, ঈশ্বর সর্বত্র আছেন, কিন্তু গুরুদেবকে সর্বত্র পাওয়া যায় না, গুরু সুদুর্লভ। সূক্ষ্ম দেহের উন্নতির দ্বারা যিনি সুখে-দুঃখে অবিচল, মান-অপমান বোধ বর্জিত,, প্রিয় বা অপ্রিয় বলে যার কাছে কিছু নেই। যিনি সব সংগ ত্যাগ করেছেন, তাকে শিষ্য করবার জন্য গুরুদেবরা সর্বস্য দিয়ে থাকেন। তিনিই উপযুক্ত শিষ্য। সুতরাং শিষ্য হওয়াই সাধনা।
ওঁং শান্তি শান্তি শান্তিঃ।
সমাপ্ত
No comments:
Post a Comment