Wednesday 31 July 2019

মনের গভীরে

মনের গভীরে  


 আমরা অনেকেই জানি মন ত্রিস্তরীয় : চেতন - অবচেতন - অতিচেতন। হঠযোগীরা বলেন : দেহ শুদ্ধ হলেই মন শুদ্ধ হবে। এবং একমাত্র শুদ্ধ মনই আত্মউপলব্ধি করতে পারে। তো যার দ্বারা আত্মউপলব্ধি হবে তাকে একটু বুঝে নেই।

এই প্রসঙ্গে একটা গল্প বলি : ছেলে বলছে আমি কাঁঠাল খাবো। বাবা বাজার থেকে কাঁঠাল কিনে এনেছে। বাবা ছেলেকে কাঁঠালের পরিচয় দিচ্ছে। এই যে উপরের কাঁটা কাঁটা আস্তরণ দেখছিস  এঁকে বলে ছোবড়া। আস্তরণ ছাড়ালে কোয়া, কোয়ার ভিতরে আঁটি, আর এইযে কোয়ার বাইরে যে দেখছিস এটাকে বলা হয় ভুচরো।  আর ভেতরে মুগুরের মতো দেখছিস এটাকে বলে মোথা। ছেলে বলছে তো বাবা কাঁঠাল কোথা ?

তো মনকে খুঁজলে, দেহের মধ্যে কোথাও পাওয়া যাবে না। তবু আমাদের মনকে জানতে হবে।

যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তারা জানে -  মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের কাজ কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। একটা হচ্ছে সুষুম্না কান্ডীয় (Spinal Cord  Level ) , দ্বিতীয়টা হচ্ছে নিম্নতর মস্তিস্ক স্তর (Lower Brain Level) উচ্চতর মস্তিস্ক স্তর  (Upper Brain Level )

এই উচ্চতর মস্তিস্ক আমাদের মাথার সবচেয়ে বা আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ন অংশ। আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার সংগ্রহশালা হিসাবে কাজ করে। অতীতের অভিজ্ঞতার অধিকাংশ স্মৃতিই এখানে সঞ্চিত থাকে। এছাড়া আমাদের শরীরের যে প্রতিক্রিয়া হয় অর্থাৎ যাকে  আমরা চেতন মনের কাজ বলি, তার খবর এখানে সঞ্চিত থাকে। এবং নিজের ইচ্ছায় সে খাবরাখবরকে কাজে লাগিয়ে দেহের চেষ্টীয় প্রতিক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

নিম্নতর মস্তিস্ক দ্বারা দেহের অধিকাংশ অবচেতন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রক্তচাপ,শ্বাসক্রিয়া, ক্রোধ, উত্তেজনা, যৌনক্রিয়াকলাপ, যন্ত্রনা, আত্মতুষ্টি, এগুলো সবই নিম্নতর মস্তিষ্কের কাজ।  অতএব আমরা যাক অবচেতন মনের কাজ বলি তা এই নিম্নতর মস্তিস্ক করে থাকে।

দেহের ইন্দ্রিয়সকল দ্বারা গৃহীত সমস্ত সংবাদ বা উদ্দীপনা সুষুম্নাকাণ্ডে প্রেরণ করা হয়।  এবং সুষুম্নাকাণ্ড এই সংবাদের ভিত্তিতে সুষুম্না কাণ্ডের উদ্ভাবনী প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব হয়। এটা স্বয়ংক্রিয় এবং সংজ্ঞাবহ সংকেত সুষুম্নাকাণ্ডে যাবার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায়। এটাই অতিচেতন মনের কাজ বলতে আমরা যা বুঝি তাই।

মন কোনো আলাদা বস্তূ  বা স্নায়ু নয়। বিভিন্ন স্নায়ুর ক্রিয়াকে আমরা মনের ক্রিয়া বলি। মন বলে কিছু নেই সবই স্নায়ুর খেলা।  আমাদের এই স্নায়ুর কেন্দ্রে যেতে হবে।  স্নায়ু যেখান থেকে  শুরু হয়েছে সেটা মস্তিস্ক। আর স্নায়ুর অবতরণ ক্ষেত্রে হচ্ছে সুষুম্না কাণ্ড। তাই সুষুম্না নাড়িকেই আমাদের আশ্রয় করতে হবে যদি আমরা আত্মউপলব্দ্ধি করতে চাই। এই স্নায়ুকেন্দ্রে প্রতিফলিত হবে আমাদের অধরা ঈশ্বর।আমাদের চেতন স্বরূপ।

ওম শান্তি শান্তি শান্তিঃ             

আধ্যাত্মিক জগতের প্রবেশদ্বার হচ্ছে "মন" .মনকে না জানলে সাধন জগতের কিছুই জানা যায় না।তাই সাধনা করতে চাইলে মনকে বুঝতে হবে, ধরতে হবে। শুধু সাধন জগতে নয়, আমাদের এই পার্থিব জীবনে অর্থাৎ  ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে সবশেষে বিশ্বস্তরীয় জীবনে মনের গুরুত্ত্ব অপরিসীম। যে মনকে জেনেছে, তার জীবনে সুখ এসেছে, আর যে জীবনে কখনো মনকে বুঝতে পারেনি, তার জীবনে দুঃখই দুঃখ। মনিষীরা বলছেন, মানুষের জীবনে বন্ধনের কারণও এই মন। যে মনকে জেনেছে, সে স্বাধীন, সুখী। আর যে মনকে জানতে পারেনি, সে বন্ধনে আবদ্ধ, পরাধীন।

এখন মন কথাটার অভিধানগত অর্থ  কি ? মন বলতে আমরা কি বুঝি ?  যার সাহায্যে মানুষ মনন করে, তাকেই বলে মন। এই মনকে আবার কেউ কেউ বলেন চিত্ত। চৈতন্য যেখানে প্রতিফলিত হয় সেটাই চিত্ত। মনকে আবার কেউ বলেন, অন্তঃকরণ। অর্থাৎ ভিতরে বা  অন্তরে যিনি কাজ করেন, তাকে বলে অন্তঃকরণ। এই মনের সাহায্যে আমরা জ্ঞান, বুদ্ধি আহরণ করি, তাই একে কেউ কেউ পেলেন প্রজ্ঞা। সমস্ত ইন্দ্রিয়ের ইনিই প্রবর্তক, তাই কেউ কেউ এঁকে  বলেন, প্রবৃত্তি। আবার বলা যায়, আমাদের ইচ্ছাশক্তির প্রবর্তক ইনি তাই এঁকে প্রবৃত্তি বলা যায়। আবার কেউ এঁকে হৃদয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ আমাদের দয়ার ভাব উদয় হয় এখানে তাই হৃদয়। তা আপনি মনকে  যে নামেই ডাকুন না কেন, মন মনেই থাকবে। আসলে মনের বিভিন্ন ক্রিয়ার জন্য বা তার বিভিন্ন রকমের স্বভাবের জন্য আমরা ভিন্ন ভিন্ন নাম ডাকি। মন আমাদের অধরা। মন কোথায় থাকে আমরা জানি না। কেবল তার উপস্থিতি টের পাই, বা অনুমান করি মাত্র।

আমরা জানি, আমাদের পঞ্চভূতের শরীরের কোথাও মনকে খুঁজলে পাওয়া যাবে না।  আসলে স্নায়ুর ক্রিয়া। সাধকের ভাষায় চক্রের ক্রিয়া। তাই চক্রগুলো সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।

আমাদের দর্শন, আমাদের শ্রবণ, ইত্যাদি  আমাদের শরীরের বিভিন্ন চক্রে  আঘাত করে, এবং সেখানে স্পন্দন তোলে, তাকে চঞ্চল করে তোলে, এবং ক্রিয়াশীল করে তোলে। আমাদের বিশেষ বিশেষ জায়গায় বা গ্রন্থিতে আলোড়ন তোলার  সক্রিয় ভূমিকা নেয়, আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়। । আর ওই গ্রন্থি যখন ক্রিয়াশীল হয়ে যায়, তখনি আজব ব্যাপার সংগঠিত হয়। মানুষ তখন চিন্তাকরতে শুরু করে, ভাবনা করতে শুরু করে। এবং এই স্পন্দনধারায় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে  মানুষের চিন্তা ধারার পরিবর্তন হয়। বিচারাধারার পরিবর্তন হয়। কর্মধারার পরিবর্তন হয়। মানুষ পাশবিক প্রবৃত্তি ত্যাগ করে, দেবমানব হয়ে যায়।  মানুষের চক্র সংখ্যা ১১৪।  সমস্ত চক্র (১১৪) ক্রিয়াশীল হতে পারে। ১১৪টি চক্রের মধ্যে ১০৮টি চক্র ক্রিয়াশীল করা যায়। এসব আসলে মহামানবের ব্যাপার। অবতারদের ব্যাপার। এই জন্য জপের মালায় ১০৮টি পুঁথি থাকে। মহামানবের ১০৮টি চক্র ক্রিয়াশীল থাকে।  বাকি ছয়টি ক্রিয়াশীল হয় না। কিন্তু মাত্র ৭টি চক্র বা ১১টি স্পর্শকাতর জায়গায় আমরা যারা সাধারণ মানুষ, একটু চেষ্টা করলেই সেগুলিকে ক্রিয়াশীল করতে পারি। সেজন্য এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা থাকা দরকার। প্রথমে এটি কল্পনা করে নিতে হয়। সাধনার সঙ্গে সঙ্গে এই সব জায়গায় মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। তখন এর সঠিক অবস্থান জানা যায়।

ওম শান্তি শান্তি শান্তিঃ 


আমাদের শরীরে ১১টি স্পর্শকাতর জায়গা আছে, যেগুলো আমাদের মনের ক্রিয়াকে সংগঠিত করে, এই এগারোটি জায়গার  মধ্যে মেরুদণ্ডের  মধ্যে ৬ টি। এবং মস্তিষ্কে ৩ টি। এবং দুটি আছে মুখাবয়বে। এগুলোর ক্রিয়াকে আমরা আমাদের মনের ক্রিয়া বলে থাকি।  
আমাদের মেরুদণ্ডের দুইদিকে দুটো নাড়ী  আছে, তার নাম  ইড়া,  পিঙ্গলা। এই ইড়া ও পিঙ্গলার মাঝে অর্থাৎ ইড়ার ডানদিকে ও পিঙ্গলার বাম  দিকে সুষুম্না নাড়ী অবস্থান করছে। এই সুষুম্নার মধ্যে আছে   বজ্রাখ্যা নাড়ী। আর বজ্রাখ্যা নাড়ীর মধ্যে অবস্থান করছে  চিত্রাণি নাড়ী। এই নাড়ীগুলোর বিভিন্ন স্থানে কিছু সংযোগস্থল আছে, যেখান থেকে উভয়পার্শ্বে বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক স্নায়ু নির্গত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে। এগুলোকে বলে গ্রন্থিচক্র। স্পাইনাল কর্ড লেভেলে বা মেরুদন্ড সংলগ্ন স্নায়ুর সংযোগস্থল গুলো হচ্ছে :
মূলাধার,(মেরুদণ্ডের শেষে,পায়ুদেশের খানিকটা উপরে, ) 
স্বাধিষ্ঠান, (লিঙ্গমূলে) 
মনিপুর,(নাভির ঠিক পিছনে ) 
অনাহত, (হৃদয়ের পিছনে ) 
বিশুদ্ধি, (কন্ঠার ঠিক পিছনে) 
আজ্ঞা, (মেরুদণ্ডের শুরুতে - এটি ভ্রূযুগলের পিছনে নিম্ন মস্তিষ্কে)

এছাড়া  আছে 
সহস্রার, (মস্তিষ্কের তালুতে) 
বিন্দু, (সহস্রারের ঠিক উপরে )

এর পরেও আমাদের মুখাবয়বে  তিনটি স্পর্শকাতর জায়গা সম্পর্কে আমাদের ধারণা রাখা উচিত।  সেগুলো হল : 
 ভ্রূযুগল মধ্যে, যাকে আমরা ত্রিনয়নের স্থান বলি 
নাসিকাগ্র ; অর্থাৎ নাসিকার অগ্রভাগ 
এবং চিদাকাশ অর্থাৎ চোখ বুজলে যেখানে আমরা অন্ধকার দেখি । :

  এগুলো  ক্রিয়াশীল করলে, এখন থেকে রস নিঃসরণ হয়। আর রসের স্পন্দন আমাদের ভাবনার জগতে আলোড়ন তোলে, আমাদের ক্রিয়াশীল করে তোলে,  বা এগুলোর সাম্যাবস্থা থাকলে আমরা ভালো থাকি, আর এগুলো অস্থির হলে বা চঞ্চল হলে আমাদের মন চঞ্চল হয়।  

 আমরা জানি সমগ্র ব্রহ্মান্ড সাতটি  লোক বা স্তরে  বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে : ভূ-লোক, ভুব-লোক, স্বঃ-লোক, মহঃ-লোক, জনঃ-লোক, তপঃ-লোক, এবং সত্যম বা  সত্য-লোক। আবার আমাদের শরীরের মধ্যেও সপ্ত ধাতু আছে যেমন : শুক্র, শোনিত, মজ্জা, মেদ, মাংস, অস্তি , ত্বক। এই দেহের এক একটা স্থান এক একটা লোকের কর্ম- কেন্দ্র। এই কর্মকেন্দ্রের নামই চক্র বা গ্রন্থিচক্র । এই গ্রন্থিগুলো বা এক একটা গ্রন্থি এক এক তত্ত্বের কর্মকেন্ত্র। তত্ত্ব অর্থাৎ পঞ্চতত্ত্ব - ক্ষিতি, অপ, তেজ. মরুৎ , ব্যোম। দেহের প্রধান প্রধান গ্রন্থি গুলির অন্তর্মুখী রস  নিঃসরণের ক্ষমতা আছে। এই অন্তর্মুখী রসই রক্তের সঙ্গে মিশে দেহের গঠন ও পালনপোষন করে। এবং আমাদের  মানসিক জীবন  বা মন গঠন করে। যার দেহে যে গ্রন্থির আধিপত্য বেশি বা যার দেহে যে গ্রন্থি অধিক ক্রিয়াশীল, তাকে সেই গ্রন্থিপ্রধান মানুষ বলা হয়।
গ্রন্থি বা  চক্র থেকে  নির্গত অন্তর্মুখী রস, রসের স্পন্দন  আমাদের মনের ক্রিয়া সম্পাদন করে। তাই একে আমরা মন  গঠনের কারন বলে থাকি। 

যদিও সমস্ত গ্রন্থিই আলাদা আলাদা ভাবে সারা শরীরে ক্রিয়াশীল। তথাপি এক এক গ্রন্থির এক একটি প্রধান কার্যকেন্দ্র  আছে। এগুলোকে স্বামী শিবানন্দ সরস্বতী ব্যাখ্যা করেছেন এই ভাবে। :

আজ্ঞাচক্র : কণ্ঠদেশ থেকে ললাটের মধ্যবর্তী অংশ   আকাশ তত্ত্বের কাজ করে। অর্থাৎ ব্যোম গ্রন্থি বলা যেতে পারে। এখানেই  ইন্দ্রগ্রন্থি ( THYROID) উপেন্দ্রগ্রন্থি (Para-Thyroid ), তালুগ্রন্থি (Tonsil ),  লালা গ্রন্থি (Salivary Glands ) ইত্যাদির কর্মক্ষেত্র   । এখান থেকেই যে অন্তর্মুখী রস  নিঃসৃত হয় আমাদেরকে সুস্থ থাকতে  সাহায্য করে।  এই গ্রন্থিগুলি  সুস্থ-সবল থাকলে - আমাদের স্নেহ, প্রীতি, ভালোবাসা, উচ্চ চিন্তা বা গভীর চিন্তা করার ক্ষমতা থাকে। আর গ্রন্থিগুলি  অতি সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে আমাদের বিষাদ, উচ্চ চিন্তার ক্ষমতা হ্রাস, হতদ্যম, আলস্য, কর্মবিমুখতা প্রভৃতি দেখা দেয়। ব্যোম তত্ত্বে সত্ত্বগুণের আধিপত্য। 
                                                                                                                                                   অনাহত চক্র : এর পরে আসছে বক্ষ প্রদেশ।  এটি বায়ুতত্বের প্রধান কর্মকেন্দ্র। এখানে দুটো ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, মঙ্গলগ্রন্থি (thymus ) এবং প্রাণকোষ নির্মাণকারী গ্রন্থি এবং অনেকগুলো উপগ্রন্থি এই বায়ু গ্রন্থির অন্তর্গত। বায়ুই দেহের প্রধান রক্ষক ও পরিচালক।
এই বায়ু গ্রন্থি ও তার তার অন্তর্গত গ্রন্থিগুলি সুস্থ-সবল থাকলে একদিকে যেমন দেহ সুস্থ থাকে তেমনি এই গ্রন্থিই মানুষকে ধীর-স্থির, শুদ্ধ-শান্ত, শ্রদ্ধাশীল, ও মহাকর্মী করে । বায়ু ঠিকমতো কাজ না করলে মানুষ অস্থিরমতি, অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন হয়।

মনিপুর : এর পরে আসছে মধ্যপ্রদেশ অর্থাৎ পেট। এটি অগ্নিগ্রন্থির  অন্তর্গত। এখানে কি আছে এক বার দেখে নেই। প্লীহা,(Spleen ) যকৃৎ(liver ) অগ্ন্যাশয় (Pancreas ) শুক্রগ্রন্থি (Adrenal Gland )  প্রভৃতি গ্রন্থি অগ্নিগ্রন্থির প্রধান কর্মক্ষেত্র। অগ্নিগ্রন্থিই শরীরে তাপ প্রদান করে। প্রাণকে সঞ্জীবিত রাখে। এই অগ্নিগ্রন্থি থেকে যে রস  নিঃসৃত হয় তা Nitric Acid , Hydrochloric Acid, Sulphuric Acid প্রভৃতি দাহিকাশক্তি সম্পন্ন উপাদানের সমাহার। এই অগ্নিরসই পাচকরস, পিত্তরস, অম্লরস। এই অগ্নিরস অন্নকে দগ্ধ করে, রসরক্তে পরিণত করে। দেহের মাংস মেদ অস্থি প্রভৃতি গঠনে সহায়তা করে।
এই অগ্নিপ্রধান লোকেরাই হয় মহাতেজস্বী, উদ্দমী  ।  নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা থাকে এঁদের। আর এই গ্রন্থি যদি ঠিক ঠিক মতো কাজ না করে তবে তারা হয় কামুক, ঝগড়ুটে, দাম্ভিক, অহংকারী, উগ্র, অস্থির, অসহিষ্ণু।
স্বাধিষ্ঠান চক্র মূলাধার চক্র :এর পরে আসছে নিম্নাঙ্গ। বরুণগ্রন্থি  অর্থাৎ মূত্রগ্রন্থি,(kidney ), প্রজাপতি গ্রন্থি বা পিতৃগ্রন্থি (Testis ) কন্দর্প-গ্রন্থি (Prostate gland ), মদনগ্রন্থি (cowpers Gland ), মাতৃ গ্রন্থি (Ovary ) রতি গ্রন্থি,(Bartholins gland)  মিথুন  গ্রন্থি (Skenes gland ) . এগুলো সবই  বরুন গ্রন্থির অন্তর্গত। এই বরুণগ্রন্থির নিঃসৃত অন্তর্মুখী রসে সন্তান বীজ বা শুক্রকীট উৎপন্ন হয় ও সৃষ্টিধারাকে অব্যাহত রাখে। এই শুক্র হতেই দেহের সমস্ত উপাদান অর্থাৎ স্নায়ু, তন্তু  কোষ, মাংস, মজ্জা, অস্থি সমস্তই গড়ে ওঠে। বরুণগ্রন্থি হতে নিঃসৃত রসকে বলা হয় সোমরস।
ব্রুনগ্রন্থি প্রধান লোকেরা খুব সহৃদয় হয়। এদের মিষ্টি ব্যবহার, মিষ্টি কথা মানুষকে আকর্ষণ করে। এরা বৈষয়িক প্রতিষ্ঠা পায়। বরুণগ্রন্থি  ঠিক ঠিক মতো কাজ না করলে মানুষ স্বার্থপর, পরশ্রীকাতর, ক্রোধী ও কামুক হয়।
পৃথ্বি গ্রন্থি অস্থি ও মাংস উপাদানের কারন ক্ষেত্র। পৃথ্বি গ্রন্থির শক্তি ও তার প্রকাশ সুপ্ত।
পৃথ্বি গ্রন্থিপ্রধান লোকেরা স্থুলদেহী হয়।  স্বভাব হয় উদার,ও সহিষ্ণু। এরা  সাধারণত ঝামেলা এড়িয়ে চলে। এই গ্রন্থির অসামাঞ্জস্যে মানুষ হয় ভোগী স্বার্থপর।
আধুনিক বিজ্ঞান  বলছে  : স্নায়ুতন্ত্র বা nurvas system আমাদের বাহির জগৎ ও অন্তর্জগতের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে।   এই স্নায়ুতন্ত্র গঠিত হয় স্নায়ু তন্তু অর্থাৎ সুতো বা fibre-এর   মতো একপ্রকার পদার্থ দিয়ে। তন্তু গুলো বিভিন্ন আকারের হয়। সরু, মাঝারি,পাতলা। কর্ম অনুসারে এরা  তিন ধরনের হয়।  প্রথম গ্রাহক বা receptor, দুই প্রেরক বা বাহক conductor (Neurone ) এবং তিন কারক বা effector . এই তিন রকম কাজের সাহায্যে স্নায়ুতন্ত্র আমাদের অন্তর্জগৎ ও বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।
আমাদের ইন্দ্রিয়গুলি  অর্থাৎ চক্ষু, কর্ন, নাসিকা, জিব্বা, ত্বক, এই  পাঁচটি ইন্দ্রিয় এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত গ্রাহক কোষগুলি বাইরের জগতের উদ্দীপনা বা ভৌত বা রাসায়নিক পরিবর্তন গ্রহণ করে। এইবার গৃহীত উদ্দীপনা সংবেদ স্নায়ু বা বাহক স্নায়ুর মাধ্যমে স্নায়ুকেন্ত্র অর্থাৎ মস্তিস্ক বা সুষুম্নাকাণ্ডে পাঠিয়ে দেয়।
এইবার মস্তিস্ক বা সুষুম্নাকাণ্ড অর্থাৎ স্নায়ু কেন্দ্র এই উদ্দীপনার বিশ্লেষণ করে এবং ক্রিয়া স্থান বা কারকে অর্থাৎ effective organ- এ বাহকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়। 
এইবার স্নায়ু কেন্দ্র থেকে গৃহীত আদেশ অনুসারে ক্রিয়াস্থান বা কারকে কার্য সম্পাদিত হয়।
অতএব আমাদের কাছে একটা জিনিস পরিষ্কার : মস্তিস্ক হচ্ছে স্নায়ু কেন্দ্র।  এবং এখানেই সুষুম্না অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান কর্মক্ষেত্র , এবং  এখান থেকেই বাহক তন্তুর সাহায্যে  সমস্ত নির্দেশ পাঠাচ্ছে। এবং সেই মত আমরা কাজ করছি বা আমাদের কার্য সম্পাদিত হচ্ছে।
 অহং গ্রন্থি বা অহং তত্ত্বের স্থান ললাট বা আমাদের কপাল।  এই অহং গ্রন্থি আমাদের সমস্ত গ্রন্থির অর্থাৎ পঞ্চগ্রন্থির (ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম)  কর্তৃত্ব করে। আমাদের দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি, চিন্তাশক্তি, বিচারশক্তি, স্মৃতিশক্তি, সমস্ত কিছুই অর্থাৎ পঞ্চইন্দ্রিয়শক্তির  (চক্ষু, কর্ন, নাসিকা, জিব্বা, ত্বক) কর্ম পরিচালনা হয় এই অহং গ্রন্থি থেকে। এদের দোষ, ত্রূটি, দুর্বলতা সবই  যথাসাধ্য সংশোধন করে এই অহংগ্রন্থি।
এই অহংগ্রন্থি প্রধান লোকের ভিতর থেকেই বেরিয়ে আসে উচ্চ প্রতিভা, সাধু-মহাত্মা।  এই অহংগ্রন্থি ক্রিয়াশীল না থাকলে দেখা দেয় হৃদয়হীনতা, নিচটা, দুসটুবুদ্ধি।
মহৎগ্রন্থি আমাদের ললাটের উপরে। অর্থাৎ অহংগ্রন্থির কিঞ্চিৎ উপরে অবস্থিত। এরই মধ্যে আছে সোমগ্রন্থি, দেবক্ষগ্রন্থি (Pineal Gland ), রুদ্র গ্রন্থি, সহস্রার গ্রন্থি  প্রভৃতি। এই মহৎ গ্রন্থির অন্তর্মুখী রসের নাম সোমধারা। এই সোমধারাই মাথা থেকে নেবে দেহের সমস্ত গ্রন্থিকে, সমস্ত স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ-সবল ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।
এই মহৎ গ্রন্থি প্রধান লোকই মহাপুরুষ, অবতার রূপে পূজিত হন। পৃথিবীতে এঁরাই নরোত্তম। ভগবৎ প্রাপ্তির অপার্থিব অনাবিল আনন্দ এঁরাই আস্বাদন করেন।
মহৎগ্রন্থির ঠিক উপরে আছে ব্রহ্মরন্ধ্র, যা আমাদের দেহাকাশ ও দিব্যাকাশকে  যুক্ত রেখেছে। এই ব্রহ্ম বা সহস্রার প্রদেশেই চেতনার অনন্ত পারাবার, এই প্রদেশই  গুণাতীত ভূমি। একেই কেউ বলে কৈলাস, কেউ বলে পরমশিব ও পরমাশক্তির অধিষ্ঠান ভূমি।
এই গ্রন্থিস্রাব বা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালা আমাদের জীবন, আমাদের ব্যক্তিত্ব, আমাদের মন, আমাদের স্বভাব নিয়ন্ত্রিন করছে । 
অতএব আমরা বুঝলাম, মন কোনো আলাদা বস্তূ  বা স্নায়ু নয়। বিভিন্ন স্নায়ুর ক্রিয়াকে আমরা মনের ক্রিয়া বলি। মন বলে কিছু নেই সবই স্নায়ুর খেলা।  আমাদের এই স্নায়ুর কেন্দ্রে যেতে হবে।  স্নায়ু যেখান থেকে  শুরু হয়েছে সেটা মস্তিস্ক। আর স্নায়ুর অবতরণ ক্ষেত্রে হচ্ছে সুষুম্না কাণ্ড। এটি শেষ হয়েছে আমাদের মূলাধারে। তাই সুষুম্না নাড়িকেই আমাদের আশ্রয় করতে হবে যদি আমরা আত্মউপলব্দ্ধি করতে চাই। এই স্নায়ুকেন্দ্রে প্রতিফলিত হবে আমাদের অধরা ঈশ্বর। আমাদের চেতন স্বরূপ।

ওম শান্তি ওম শান্তি ও শান্তিঃ।  

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মনের একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। আমাদের জীবনে যখন কোনো বিপদ আসে, বা কোনো পরিবর্তন আসে, তখন আমাদের মনে কি হয় ? প্রথমে আমাদের মনে  আশঙ্কা জাগে , তারপরে ভয় আসে , তারপরে হয় রাগ এবং সব শেষে হয়  দুঃখ। 
আমাদের মনের তিনটি স্তর  আছে। এগুলো হচ্ছে সাত্ত্বিক, রাজসিক, ও তামসিক। আমরা যখন যে স্তরে  থাকি, অর্থাৎ আমাদের মানসিক অবস্থা যে স্তরে থাকে, আমরা সেই মতো চিন্তা করি। এবং একই বিপদের অবস্থায়  তিন রকম মানসিকতার মানুষ তিন রকম  বিচার শুরু করে দেয় । 

ধরুন আপনি একজন অবসর প্রাপ্ত ব্যক্তি। সারা জীবনের সঞ্চয় ব্যাংকে রেখেছেন। এখন  ব্যাংকের সুদের উপরে নির্ভর করে আপনাকে চলতে হয়। এখন হঠাৎ করে বা দিনে দিনে ব্যাঙ্কের সুদের হার কমে যাচ্ছে। আপনার মনে কি প্রতিক্রিয়া হবে ? 

তামসিক মনের প্রতিক্রিয়া : এতো মহা ঝামেলা ! দিন দিন জিনিসের দাম বাড়ছে, ঔষধের দাম বাড়ছে, আর ব্যাঙ্কের সুদের হার কমিয়ে দিচ্ছে ? এই সব অযোগ্য লোকেদের ক্ষমতা দিলে এই হয়। একটু শান্তিতে থাকতে দেবে না। সুদের হার কমিয়ে দিলেই কি দেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ? বেশী পাকামি এই সরকারের। এই পরিস্থিতিতে কি যে করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। এরা  কবে ব্যাঙ্কটাকেই তুলে দেবে।  ছেলে বা বৌ হয়তো বললো, তুমিতো দেখছো,  সুদ কমছে দিন দিন।  অন্য কিছু করো। আমি তো আগেই বলেছিলাম, টাকাগুলো আমাকে দাও, আমি ব্যবসাতে লাগাই, আমি তোমাকে ব্যাঙ্কের  থেকে বেশি সুদ দেবো। অমনি তেড়েফুড়ে উঠবেন, আমাকে জ্ঞান দিতে এস না তো। তোমার থেকে আমার কি বয়স  কম ? অনেক দেখেছি, টাকা গুলো নিয়ে ধংশ করার তাল। 

রাজসিক মনের প্রতিক্রিয়া : নাঃ এ পথে হচ্ছে না। অন্য পথ দেখতে হবে। ডিম্ কখনো এক ঝুড়িতে রাখতে নেই। শুনেছি, ...... ব্যাঙ্কে বেশী সুদ দেয়।  কিছু টাকা ওখানে সরিয়ে রাখতে হবে। কিছু একটা করতে হবে, সময়মতো ডাক্তারের কাছে যাওয়া ভালো। সমস্যা থাকলে তার সমাধান আছে। একটা রিস্ক নিয়ে দেখি, শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডে কিছু টাকা সরিয়ে দিলে কেমন হয় ? একটা ফ্লাট কিনে ভাড়া দিলে কেমন হয় ? ফিনান্সিয়াল কন্সাল্ট্যান্ট-এর সাথে কথা বলে দেখি, কি করা যায়। ছোটোখাটো একটা কিছু করলেও হয়। বসেই তো থাকি সারাদিন বাড়িতে।  

সাত্ত্বিক  মনের প্ৰতিক্ৰিয়া : দেখো জীবনে উত্থান পতন আছে। সুদ একসময় ১৩.৫% ছিল।  ধীরে ধীরে কমছে। তবুতো আমার কিছু টাকা ব্যাঙ্কে আছে, সেখান থেকে সুদ পাই, সারা ভারতবর্ষে কত লোক আছে, যাদের না আছে সঞ্চয়, না আছে পেনশন। তারাও তো বেঁচে আছে। কি আর হবে, এখন তো না আছে পোশাকের জন্য খরচ, না আছে মাছ মাংস খাবার লোভ। ঠিক চলে যাবে। প্রাণায়ামটা নিয়মকরে করতে হবে।  যাতে ওষুধের জন্য খরচ বাঁচানো যায়। হতাশ হয়ে লাভ নেই, দেখি বাড়ির সবার সাথে আলোচনা করে, একটা পথ নিশ্চয়ই বের হবে। সব সমস্যার সমাধান আছে।  এরও সমাধান আছে। 

তামসিক মানসিকতার মানুষ স্থিতাবস্থা পছন্দ করে। নতুন ভাবে চিন্তা করা বা নতুন পদক্ষেপ তার আসে না। উদ্দমহীন মানুষ এরা। 
অন্যদিকে রাজসিক মানসিকতার লোকেরা, নতুন চিন্তা  ও নতুন কর্মে আগ্রহ দেখায়। যদিও সে নতুনের মধ্যে যেতে চায়, কিন্তু সে আগের মতোই  ভালো থাকতে চায়। এবং সম্ভব হলে পূরনো  দিনে ফিরতে চায়।  
আর সাত্বিক মানুষ নতুন চিন্তা, নতুন কর্ম নতুন পরিস্থিতি সব কিছুকে সে মানিয়ে নিতে চায়। পুরুনো অবস্থাকে আঁকড়ে ধরে হতাশ হতে চায় না। সমস্যার সমাধান খোঁজে। নতুন ভালো কিছুর জন্য আশায় থাকে।

তামসিক মনের মানুষেরা সাধারণত স্থিতাবস্থায় থাকতে চায়। বিপদের লক্ষণ দেখলেও সতর্ক হয় না।  ভাবে, আমার ক্ষেত্রে এসব হবে না। নিজের বিপদ বা দুঃখের জন্য সে অন্যকে দায়ী করে।  অন্যকে দোষী ভাবে। নিজের ভুল বুঝতে চায় না। নিজেকে পাল্টাতেও চায় না।

রাজসিক মনের মানুষেরা পুরোনো পরিস্থিতি খারাপ বা পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা হতে দেখলে, আগে থাকতেই নতুন পথের সন্ধান করে। সে আগের মতোই ভালো থাকতে চায়। পরিবর্তিত অবস্থায় খারাপ থাকার কথা সে ভাবতেই চায় না। চেষ্টা করে যাতে সমস্যার সমাধান হতে পারে। 

সাত্ত্বিক মনের মানুষরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখে। এবং সামান্য অভাসে সে ভবিষ্যৎ অনুমান করতে পারে। এবং সেই মত ব্যবস্থা নেয়। নিজের বিপদের জন্য, অন্যকে দায়ী করে না। বরং সমাধানের রাস্তা খোঁজে। পরিস্থিতি যখন তার নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন সে নতুন পরিস্থিতিকে মেনে নেয়।

নিজের ভাবনাকে ধরার চেষ্টা করুন। বিপদের সময়, নতুন পরিস্থিতিতে আপনার মনের অবস্থা কি হয়। তাহলে আপনি নিজের মনকে বুঝতে পারবেন। আর নিজের মনকে যদি আপনি ধরতে পারেন,  অর্থাৎ ভাবনা আপনাকে দুঃখ দিচ্ছে, না আনন্দ দিচ্ছে এটা যদি আপনি ধরতে পারেন, তবে আপনি আপনার ভাবনাকে প্রভাবিত করবার চেষ্টা করতে পারবেন । ভাবনাকে বলুন, ভেবে কিছু লাভ হবে না। কি করতে হবে তাই বলো। তখন আপনার ভিতর থেকে জবাব এসে যাবে।  আর সেই মতো কর্মে লিপ্ত হয়ে যান। অতীত আপনার হাতে নয়। বর্তমান আপনার হাতে।  আর বর্তমান আপনাকে ভবিষ্যতের রাস্তা তৈরি করে দেবে।

কতকগুলো মানুষ আছে যারা চিরকালই দুঃখে থাকে। আসলে তারা তামসিক মনের অধিকারী। কিছু মানুষ আছে, তারা চেষ্টা দ্বারা নিজের পরিবর্তনের চেষ্টা করে। এঁরা রাজসিক মনের অধিকারী। আর এক শ্রেনীর মানুষ আছেন তার সব পরিস্থিতিতে ভালো থাকে - অর্থাৎ সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেয়। আবার বিচারশীল পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করে না। এরাই সাত্ত্বিক মনের মানুষ। 

ওম শান্তি শান্তি শান্তিঃ       














      
























       


No comments:

Post a Comment