Friday 15 July 2022

শান্তি ব্যাপারটা আত্মার নিজস্ব

 এক রাজাকে এক পণ্ডিত ব্রাহ্মণ প্রতিদিন দক্ষিণার বিনিময়ে শাস্ত্রপাঠ করে শোনাতো। শাস্ত্রপাঠ শেষে সে রাজাকে প্রশ্ন করতো, রাজামহাশয় বুজেছেন তো ? বিষয়ে আসক্ত জীবের সুখ-দুঃখের অনুভূতি হয়। বিষয়ে অনাসক্ত জীব আনন্দে থাকে।  তো রাজা তার প্রতি-উত্তরে বলতেন- তুমি বুঝেছো তো ? তুমি আগে বোঝো। এখন রাজার এই কথায়, পণ্ডিত ব্রাহ্মণ কেমন যেন অপমানিত বোধ করতো।  মনে মনে ভাবতো, সংসারের জন্য, যদি অর্থের প্রয়োজন না হতো, তবে আর সে রাজাকে শাস্ত্রপাঠ করে শোনাতো না। কেননা, শাস্ত্র কথা যে শুধু শোনে, কিন্তু গ্রহণ করতে চায় না, তাকে শাস্ত্রকথা শোনানো বৃথা।  এ যেন ভষ্মে ঘি ঢালা। 









ekশান্তি ব্যাপারটা আত্মার নিজস্ব সম্পদ। আমরা সবাই পরিবেশের দাস। 


আমি তখনই সুখী হয়, যখন মাস্টার মহাশয় আমাদের অনেক নাম্বার দেন।  যখন মাস্টার মহাশয় আমাকে প্রশংসা করেন। আমরা তখন সুখী হই, যখন আমার বাড়ি গাড়ি থাকে। যখন আমার হাতে টাকা পয়সা থাকে। যখন সবাই আমার প্রসংসা করে, তখন আমি সুখী হয়। আমি তখন সুখী হয়, যখন আমার শরীর স্বাস্থ ভালো থাকে। আবার এর উল্টোটা হলেই আমরা দুঃখী হয়ে যাই। আমরা গাড়িতে কেউ আঘাত করলে, আমার শরীরে কেউ আঘাত করলে, এমনকি আমার স্ত্রী-পুত্রকে কেউ আঘাত করলে, আমরা দুঃখী হয়ে যাই। তো আমার সুখ-দুঃখ ওই গাড়ি, বাড়ি, স্ত্রী, পুত্র, শরীর ইত্যাদির উপরে নির্ভর করছে। আমি বিশ্বাস করি, বা বলা যেতে পারে, আমার মধ্যে এক বদ্ধমূল ধারণা  হচ্ছে, এগুলোর মধ্যেই আমার সুখ-দুঃখ নিহিত আছে। তাই এগুলোকে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই, এগুলোকে সুরক্ষিত করবার জন্য, আমার স্বাভাবিক আগ্রহ ও চেষ্টা থাকে। এগুলোকে ছাড়া আমি বাঁচতে জানি না। এখন কথা হচ্ছে, মহাত্মাগণ বলছেন, তোমার এই যে বিষয়কে ঘিরে যে সুখ-দুঃখের অনুভূতি হচ্ছে, এটি  আসলে সত্য নয়। দেখো, তুমি ধরো একটা ভালো কিনেছো, সেই গাড়ির ভিতরে তুমি বসে আছো, একটা আরাম অনুভব করছো।  এই যে আরাম তোমার শরীরকে জুড়িয়ে দিচ্ছে। আসলে আমি যখন নিজেকে শরীর বলে মনে করি, তখন শরীরের সুখকে আমি আমার সুখ বলে মনে করি।  

  

No comments:

Post a Comment