শিব ধ্যান
ওম্-ওম্-ওম্
ওম্ সর্বেসাম স্বস্তিরভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম শান্তিরভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম পূর্ণম ভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম মঙ্গলম ভবতু।
ওম্ নমস্তভ্যং বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুষে
নমঃ পিনাক-হস্তায় বজ্র-হস্তায় বৈ নমঃ।
নমস্ত্রিশূলহস্তায় দণ্ডপাশাসিপানয়ে
নমস্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ।
বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারণায়, জ্ঞান প্রদায় করুণাময়সাগরায়
কর্পূর-কুন্দ -ধবলেন্দু-জটাধরায়, দারিদ্র দুঃখ দহনায় নমঃ শিবায়। নমঃশিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে,
নিবেদয়ামি চাত্মানাং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর।
ওম্ নমঃ শম্ভূবায় চ ময়ভবায় চ
নমঃ শঙ্করায় চ ময়স্করায় চ
নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।
কল্পনা করছি : বরফ ঢাকা কৈলাশ পর্বত। আমি ধ্যান আসনে কৈলাস পর্বতের শিখরে বসে আছি। চক্ষু মুদ্রিত অবস্থায় দেবাদিদেব মহাদেবের-ধ্যান কল্পে বসেছি । চারিদিকে স্বেতবর্ণের বরফ আচ্ছাদিত পর্বত শিখর। ঊর্ধে অসীম আকাশ। আকাশে অসংখ্য তারকারাজি। যেন এক-এক-জন ধ্যানস্থ মুনি। সবাই আমার উপস্থিতিকে স্বাগত জানাচ্ছে।
আমি যে পর্বত শিখরে ধ্যান কল্পে উপস্থিত হয়েছি তার ঠিক সামনেই বসে আছেন ধ্যানস্থ ত্রৈলোক্যনাথ। দৃঢ় শরীর। পায়ে ঝুমুর। ব্যঘ্রচর্ম আবৃত নিম্নাঙ্গ। উম্মুক্ত বক্ষ। সর্বাঙ্গে বিভূতির প্রলেপ। কন্ঠে মসীবর্ণ সর্প, মালার আকারে শোভা পাচ্ছে। দেহরক্ষীর মতো সর্পদেব ফনা তুলে চারিদিকে নিরীক্ষণ করছেন । ত্রিকালজ্ঞে কন্ঠের বর্ণ নীল, সমুদ্র উত্থিত বিষ ধারণের চিহ্ন বহন করছে। ওষ্ঠে মৃদু হাসি। চক্ষু মুদ্রিত। কর্নে দুল। হস্তের কব্জিতে রুদ্রাক্ষের মালা, বাহুতেও রুদ্রাক্ষের মালা। কন্ঠে রুদ্রাক্ষের মালা। দুই চক্ষু মুদ্রিত হলে কি হবে, ত্রিনেত্র কিন্ত উন্মিলিত। এক জ্যোতি রেখা ত্রিনেত্র থেকে উজ্জ্বল তীক্ষ্ন জ্যোতি বিকিরণ করছে। সেই জ্যোতি আমার শরীরে এসে পড়েছে। শিব বাবার মস্তকে জটা। বিশাল জটা রুদ্রাক্ষের বন্ধনেও অবাধ্য। শিরের উপরে জটার খোপা, আর একটা শির মনে হচ্ছে। জটার আড়ালে অর্ধ চন্দ্র শোভা পাচ্ছে। বা-হাতে কমণ্ডলু। ডান হাতে ত্রিশূল। দেবাদিদেব মহাদেব ব্যাঘ্রচর্মের আসনে আসীন। মহাকালকে,মঙ্গলময়কে দু হাত তুলে দূর থেকে মনেমনে প্রণাম করি ।
দেবদেব মহাদেবের ধ্যানের জন্য প্রস্ত্ত করছি।
হাত দুটো মস্তিষ্কে তালুতে স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে পরম পিতা পরমেশ্বর - তোমাকে কোটি কোটি প্রণাম। এই মস্তিষ্ক সর্বদা তোমারি চিন্তায় মগন থাকুক। আমি যেন সদা সর্বদা তোমারি চিন্তায় মগ্ন থাকতে পারি, এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো দিয়ে দুই চক্ষু স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর এই চক্ষুদ্বয় যেন সর্বদা তোমাকেই দেখে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো এবার নিয়ে এলাম নাসিকা অগ্রে - নাসিকা অগ্রে স্পর্শ করে মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর এই নাসিকায় যেন সর্বদা তোমারি দেওয়া সুগন্ধি প্রাণবায়ু প্রবাহিত হয় - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এবার হাত দুটো নাবিয়ে আনলাম মুখে, ঠোটের উপরে। মনে মনে বললাম - হে পরমপিতা পরমেশ্বর, এই মুখ যেন সর্বদা তোমারি কথা বলে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো কন্ঠে স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে প্রভু, এই কন্ঠে যেন সর্বদা তোমারি সুর ধ্বনীত হয় - এই আশীর্বাদ করো দয়াময়।
হাতের চেটো বাহুতে স্পর্শ করলাম। মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর - এই হাত দুটো যেন সর্বদা তোমারি কর্মে লিপ্ত থাকে -এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এবার হাত দুটো দিয়ে পা-দুটো স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে প্রভু এই পদদ্বয় যেন সর্বদা তোমাকেই প্রদক্ষিনে ব্যস্ত থাকে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এর পর হাত দুটো নিয়ে এলাম নাভি মূলে। মনে মনে বললাম - হে পরমাত্মা, পরমপিতা পরম-ঈশ্বর ! পিতৃমাতৃ প্রদত্য, পঞ্চভূতের এই শরীর - এই শরীর তুমি শুদ্ধ করো,পবিত্র করো, সুস্থ করো, নীরোগ করো।
সবশেষে হাত দুটো নিয়ে গেলাম হৃদয় স্থলে - স্পর্শ করতে করতে বললাম - হে পরম-আত্মা পরম-ঈশ্বর তোমাকে কোটি কোটি প্রণাম - এই হৃদয়পদ্মে তোমার স্থান - এই হৃদয় তুমি পবিত্র করো - নির্মল করো - স্বচ্ছ করো - তোমার প্রতিকৃতি এই হৃদয়ে আরো স্পষ্ট প্রতিভাত হোক।
ওম নমঃ শিবায়- ওম নমঃ শিবায়- ওম নমঃ শিবায়- ওম তৎ সৎ-হরি ওম হরি ওম হরি ওম.........
এর পর 'ওম নমঃ শিবায়' এই পঞ্চাক্ষর মন্ত্র জপ্ করতে লাগলাম।
কতক্ষন জপ্ করে ছিলাম বলতে পারবনা। একটা সময় দেহবোধ লোপ পেয়ে গেল। আমার মনে হলো দেহ বলে আমার কিছু নাই। আমি এক জ্যোতির্বিন্দু। একটা চেতনা মাত্র। আস্তে আস্তে দেবাদিদেব মহাদেবের জ্যোতির মধ্যে আমি মিলিয়ে গেলাম।
জীব-আত্মা, পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হলো। তার পর আর কিছু মনে নেই। .........মঙ্গলময় পরম পিতা মহাদেব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রের শতকোটি প্রণাম গ্রহণ করুন।
ওম্-ওম্-ওম্
ওম্ সর্বেসাম স্বস্তিরভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম শান্তিরভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম পূর্ণম ভবতু ;
ওম্ সর্বেসাম মঙ্গলম ভবতু।
ওম্ নমস্তভ্যং বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুষে
নমঃ পিনাক-হস্তায় বজ্র-হস্তায় বৈ নমঃ।
নমস্ত্রিশূলহস্তায় দণ্ডপাশাসিপানয়ে
নমস্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ।
বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারণায়, জ্ঞান প্রদায় করুণাময়সাগরায়
কর্পূর-কুন্দ -ধবলেন্দু-জটাধরায়, দারিদ্র দুঃখ দহনায় নমঃ শিবায়। নমঃশিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে,
নিবেদয়ামি চাত্মানাং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর।
ওম্ নমঃ শম্ভূবায় চ ময়ভবায় চ
নমঃ শঙ্করায় চ ময়স্করায় চ
নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।
কল্পনা করছি : বরফ ঢাকা কৈলাশ পর্বত। আমি ধ্যান আসনে কৈলাস পর্বতের শিখরে বসে আছি। চক্ষু মুদ্রিত অবস্থায় দেবাদিদেব মহাদেবের-ধ্যান কল্পে বসেছি । চারিদিকে স্বেতবর্ণের বরফ আচ্ছাদিত পর্বত শিখর। ঊর্ধে অসীম আকাশ। আকাশে অসংখ্য তারকারাজি। যেন এক-এক-জন ধ্যানস্থ মুনি। সবাই আমার উপস্থিতিকে স্বাগত জানাচ্ছে।
আমি যে পর্বত শিখরে ধ্যান কল্পে উপস্থিত হয়েছি তার ঠিক সামনেই বসে আছেন ধ্যানস্থ ত্রৈলোক্যনাথ। দৃঢ় শরীর। পায়ে ঝুমুর। ব্যঘ্রচর্ম আবৃত নিম্নাঙ্গ। উম্মুক্ত বক্ষ। সর্বাঙ্গে বিভূতির প্রলেপ। কন্ঠে মসীবর্ণ সর্প, মালার আকারে শোভা পাচ্ছে। দেহরক্ষীর মতো সর্পদেব ফনা তুলে চারিদিকে নিরীক্ষণ করছেন । ত্রিকালজ্ঞে কন্ঠের বর্ণ নীল, সমুদ্র উত্থিত বিষ ধারণের চিহ্ন বহন করছে। ওষ্ঠে মৃদু হাসি। চক্ষু মুদ্রিত। কর্নে দুল। হস্তের কব্জিতে রুদ্রাক্ষের মালা, বাহুতেও রুদ্রাক্ষের মালা। কন্ঠে রুদ্রাক্ষের মালা। দুই চক্ষু মুদ্রিত হলে কি হবে, ত্রিনেত্র কিন্ত উন্মিলিত। এক জ্যোতি রেখা ত্রিনেত্র থেকে উজ্জ্বল তীক্ষ্ন জ্যোতি বিকিরণ করছে। সেই জ্যোতি আমার শরীরে এসে পড়েছে। শিব বাবার মস্তকে জটা। বিশাল জটা রুদ্রাক্ষের বন্ধনেও অবাধ্য। শিরের উপরে জটার খোপা, আর একটা শির মনে হচ্ছে। জটার আড়ালে অর্ধ চন্দ্র শোভা পাচ্ছে। বা-হাতে কমণ্ডলু। ডান হাতে ত্রিশূল। দেবাদিদেব মহাদেব ব্যাঘ্রচর্মের আসনে আসীন। মহাকালকে,মঙ্গলময়কে দু হাত তুলে দূর থেকে মনেমনে প্রণাম করি ।
দেবদেব মহাদেবের ধ্যানের জন্য প্রস্ত্ত করছি।
হাত দুটো মস্তিষ্কে তালুতে স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে পরম পিতা পরমেশ্বর - তোমাকে কোটি কোটি প্রণাম। এই মস্তিষ্ক সর্বদা তোমারি চিন্তায় মগন থাকুক। আমি যেন সদা সর্বদা তোমারি চিন্তায় মগ্ন থাকতে পারি, এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো দিয়ে দুই চক্ষু স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর এই চক্ষুদ্বয় যেন সর্বদা তোমাকেই দেখে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো এবার নিয়ে এলাম নাসিকা অগ্রে - নাসিকা অগ্রে স্পর্শ করে মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর এই নাসিকায় যেন সর্বদা তোমারি দেওয়া সুগন্ধি প্রাণবায়ু প্রবাহিত হয় - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এবার হাত দুটো নাবিয়ে আনলাম মুখে, ঠোটের উপরে। মনে মনে বললাম - হে পরমপিতা পরমেশ্বর, এই মুখ যেন সর্বদা তোমারি কথা বলে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
হাত দুটো কন্ঠে স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে প্রভু, এই কন্ঠে যেন সর্বদা তোমারি সুর ধ্বনীত হয় - এই আশীর্বাদ করো দয়াময়।
হাতের চেটো বাহুতে স্পর্শ করলাম। মনে মনে বললাম - হে ঠাকুর - এই হাত দুটো যেন সর্বদা তোমারি কর্মে লিপ্ত থাকে -এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এবার হাত দুটো দিয়ে পা-দুটো স্পর্শ করলাম - মনে মনে বললাম - হে প্রভু এই পদদ্বয় যেন সর্বদা তোমাকেই প্রদক্ষিনে ব্যস্ত থাকে - এই আশীর্বাদ করো প্রভু।
এর পর হাত দুটো নিয়ে এলাম নাভি মূলে। মনে মনে বললাম - হে পরমাত্মা, পরমপিতা পরম-ঈশ্বর ! পিতৃমাতৃ প্রদত্য, পঞ্চভূতের এই শরীর - এই শরীর তুমি শুদ্ধ করো,পবিত্র করো, সুস্থ করো, নীরোগ করো।
সবশেষে হাত দুটো নিয়ে গেলাম হৃদয় স্থলে - স্পর্শ করতে করতে বললাম - হে পরম-আত্মা পরম-ঈশ্বর তোমাকে কোটি কোটি প্রণাম - এই হৃদয়পদ্মে তোমার স্থান - এই হৃদয় তুমি পবিত্র করো - নির্মল করো - স্বচ্ছ করো - তোমার প্রতিকৃতি এই হৃদয়ে আরো স্পষ্ট প্রতিভাত হোক।
ওম নমঃ শিবায়- ওম নমঃ শিবায়- ওম নমঃ শিবায়- ওম তৎ সৎ-হরি ওম হরি ওম হরি ওম.........
এর পর 'ওম নমঃ শিবায়' এই পঞ্চাক্ষর মন্ত্র জপ্ করতে লাগলাম।
কতক্ষন জপ্ করে ছিলাম বলতে পারবনা। একটা সময় দেহবোধ লোপ পেয়ে গেল। আমার মনে হলো দেহ বলে আমার কিছু নাই। আমি এক জ্যোতির্বিন্দু। একটা চেতনা মাত্র। আস্তে আস্তে দেবাদিদেব মহাদেবের জ্যোতির মধ্যে আমি মিলিয়ে গেলাম।
জীব-আত্মা, পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হলো। তার পর আর কিছু মনে নেই। .........মঙ্গলময় পরম পিতা মহাদেব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রের শতকোটি প্রণাম গ্রহণ করুন।
No comments:
Post a Comment