Tuesday, 1 October 2019

পূর্ব জীবন - (তিন) - আগের জীবনের কর্ম্মফল এই এই জীবনে পাওয়া যায় ?



পূর্ব জীবন - (তিন) - আগের জীবনের  কর্ম্মফল কি  এই জীবনে পাওয়া যায় ?

কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এক সময়ের চা-ওয়ালা ভারতের মতো বৃহত্তম দেশের  প্রধানমন্ত্রী হয় কেমন করে ? নিতান্ত কি পুরুষাকারের জোরে, নিজের গুনের জন্য, নাকি অন্য কোনো রহস্যঃ লুকিয়ে আছে এর মধ্যে ?

মহাভারতের বিদুরের সমস্ত গুন্ থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন হস্তিনাপুরের রাজা হতে পারেন নি ? মহাবীর কর্ণ, কেন তার যোগ্য মর্যাদা পান নি। জন্মসূত্রে যুধিষ্ঠিরের বড়ভাই হয়েও কেন অর্জুনের হাতে তার মরতে হলো ? আপনি কি বলতে পারেন, পরিব্রাজক বিবেকানন্দ কেন ক্ষুধার্থ বাঘের  হাত থেকে বেঁচে ছিলেন ? মনে পরে, সদ্যজাত শিশু চলন্ত ট্রেনের বাথরুমের নল বাহিত হয়ে, রেললাইনে পড়ে  যাওয়া সত্ত্বেও, প্রসব যন্ত্রণা উপেক্ষা করে, ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়া সত্ত্বেও, মা-শিশু কি করে, কার অমোঘ নির্দেশে প্রাণে বেঁচে যেতে পারে ?

কখনো কি ভেবেছেন, প্রতাপশালী মন্ত্রীর  দল আজ কেন জেলের কুঠুরিতে বন্দি ? বহু ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও অনেকের ভালো চাকরি জোটে না। আবার সামান্য ডিগ্রি নিয়েও অনেকে উচ্চপদে প্রতিষ্ঠিত।রাজনৈতিক নেতাদের তো কোনো ডিগ্রী ছাড়াই, ক্ষমতা ভোগ করছেন।  উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন অভিজ্ঞ আমলারা, অনভিজ্ঞ ব্যক্তির অধীনে কাজ করতে বাধ্য হন  কেন  ? অযোগ্য ব্যক্তিরা কেন যোগ্যের স্থান  অধিকার করলো ? যে সব ব্যক্তি এই দুর্ভোগের স্বীকার, তারা কি পূর্বজন্মে, বা এ জন্মে, অন্যের দুঃখের  নিমিত্ত-কারন ছিল ? কারুর পৌষমাস, কারুর সর্ব্বনাশ কেন হয় ?

জর্জ ওয়াশিংটন একসময় ফেরিওয়ালার  কাজ করতেন, যিনি পরিবর্তীকালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। শেক্সপিয়র একসময় যাত্রাদলের কর্মচারী ছিলেন। মেঘনাথ সাহা একসময় বই বাঁধাইয়ের কাজ করতেন। এরা  কি সবাই এই জীবনের পুরুষাকারের জোরে বিখ্যাত হয়েছিলেন ?

পুরুষাকারের কথাই যদি বলি, বহু ছেলে-মেয়ে ভালো পড়াশুনা করে, সবাই কি প্রথম স্থান পায় ? চাষিরা চাষ করে, প্রতি বছর কি সমান ফসল হয় ? কেন এমন হয় ?

দেখুন আমরা গীতাতে দেখছি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, যারা সাধনভ্রষ্ট যোগী, তারা স্থূল দেহ ত্যাগের পরে, উন্নততর লোকে গমন করেন, সেখানে কিছুকাল বাস করবার পরে, আবার তাঁরা এই মর্তলোকে অবতরণ করেন, সেই সময় তাদের জন্ম হয় এমন পরিবারে, যেখানে সে তার সাধন ভজন করবার উপযুক্ত পরিবেশ পায়।  মানুষ তার পূর্বজন্মের অভ্যাসের শক্তি সঞ্চয় করে রাখে। পরবর্তী জন্মে সেই অভ্যাসের শক্তি তাকে সেই ধরনের অভ্যাস করতে বাধ্য করে, বা উৎসাহিত করে। এবং সঞ্চিত  ফল প্রদান করে।

দেখুন, প্রকৃতি ও পুরুষের মিলনেই জীবের  সৃষ্টি সম্ভব। ঠিক তেমনি দৈব  এবং পুরুষাকারের মিলিত শক্তি,  আমাদের কার্যফল প্রদান করে। দৈব ও পুরুষাকারের মিলন ব্যতীত কার্যসিদ্ধি এ সংসারে অসম্ভব।

প্রকৃতি ও পুরুষের মিলনই  এই জগতের কারন। আপনি যতই পুরুষাকার-এর   বড়াই করুন না কেন, অদৃষ্ট যদি আপনার সহায় না হয়, তবে সকল কাজে আপনার বাধা-বিগ্ন আসতেই থাকবে। কোনো কাজেই আমরা সফল হতে পারবো না। আমরা সবাই,একটা অদৃশ্য শক্তির ও আমাদের কর্ম্ম প্রচেষ্টার সহায়তায় বাঞ্চিত কর্ম্ম ফল পেতে পারি। এর মধ্যে, কোনো একটি যদি সহায় না হয়, তবে আমাদের কোনো কাজেই সাফল্য আসতে  পারবে না। আমাদের সবকাজই নিস্ফলা হবে, যদি দৈব আমাদের অনুকূল না হয় ।  আবার একথা সত্য দৈবের সহযোগিতা পেতে গেলে, আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।  আমাদেরকে যোগ্য করে তুলতে হবে। আমাদের জীবনে দুজনের  প্রভাবই  সমান সমান। আমরা কত অবাঞ্চিত ফল ঠেকানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তা কি পারি ? মহাভারতে, স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধ ঠেকানোর জন্য চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা কি তিনি পেরেছিলেন ? আসলে দৈবশক্তি বিনা কর্ম, আর কর্মহীন দৈবশক্তি, দুটোই  নিস্ফল হয়।  ভগবান ভিখারিকে কিছু দেন না, উদ্দমী ব্যাকুলপ্রান মানুষকে  ভরিয়ে দেন।

বিজ্ঞান এই অদৃষ্টবাদকে ভ্রান্ত বলতে পারে। বিজ্ঞান মানুষের সুখ দুঃখের কারন দর্শাতে পারে না। অধ্যাত্ববাদ কখনো মানুষকে একথা  বলে না যে, ভিখারির মতো ভগবানের কাছে কিছু চাইলেই তা তিনি দিয়ে দেবেন। আপনি খারাপ কাজ করবেন, আর আপনাকে ভগবান ভালো ফল দেবে, একথা আমাদের ধর্ম্ম শেখায় না। কেউ হয়তো সাময়িক ভাবে, অন্যায় কাজ করে পার পেয়ে যেতে পারে। কিন্তু একটা সময় আসে, যখন তার সমস্ত হিসাব চুকিয়ে দিতে হয়। যে টাকা আপনি আজ  অন্যায় ভাবে অর্জন করছেন, তা আপনাকে অন্য ভাবে ফিরিয়ে  দিতেই  হবে।

এই সম্পর্কে একটা গল্প বলি। এক সাধু ছিল, সে তার পূর্ব্ব জীবনের কথা বলে বেড়াতো।একসময়, তার একটি সোমত্ত্ব  ছেলে ছিল। ছেলেটির মৃত্যু তাকে এক চরম শিক্ষা দিয়ে যায়  ।  আর তার ফলেই সে আজ সাধু হয়েছে।  ঘটনাটা এই রকম। সাধু যৌবনে, বিয়ের আগে  খুব গরিব ছিল।  তার এক বন্ধু তাকে টাকাপয়সা দিয়ে কাপড়ের  ব্যবসায় নাবতে  সাহায্য করেছিল। তো একবার বোম্বাই এর এক ব্যবসায়ীর কাছে, তাদের লাখ টাকার মতো পাওনা হলো। দুজন মিলে  সেই টাকা আনতে  গেলো। টাকা নিয়ে, বোম্বে ঘুরে দেখবে বলে, একটা হোটেলে একটা রাত কাটিয়েছিলো। সেখানে, তার  মধ্যে সমস্ত টাকা আত্মস্বাৎ করবার দুর্মতি মাথায় এলো। দোকান থেকে বিষ কিনে, বন্ধুটিকে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাইয়ে, তাকে মেরে ফেললো। আর একটা ট্যাক্সি করে সমুদ্রের পারে, নিয়ে গিয়ে কবর দিলো। কেউ জানলো না।
বাড়িতে এসে ভালো মানুষের মত, কান্নাকাটি করলো, বন্ধুর স্ত্রীর কাছে, বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ দিলো। কৃত্তিম সহানুভুনিভুতি দেখিয়ে বন্ধুর স্ত্রীকে দশ হাজার টাকাও দিয়ে দিলো। বন্ধুর  স্ত্রী তাকে বিশ্বাস করলো, এবং ভাবলো, এর মতো ভালো মানুষ হয় না।

এর পরে, তার বিয়ে হলো, একটা ছেলেও  হলো। ছেলে বড়ো  হলো। লেখাপড়া শিখলো। সুখেই সংসার চলছিলো।  একদিন তার জোয়ান  ছেলেটি অসুস্থ হলো। তাকে বাঁচিয়ে তুলবার  জন্য, সে  লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করলো। কিছু ছেলেটিকে বাঁচাতে পারলো না। তবে ছেলেটি মৃত্যুর আগে একটা আশ্চার্য্য কথা বলে গেলো পিতাকে। বললো - বাবা ভালো করে চেয়ে দেখো তো, চিনতে পারো কি না। আমি তোমার সেই বন্ধু, যাকে  তুমি বিষ খাইয়ে মেরেছিলে। আজ সমস্ত ঋণ শোধ হলো। তোমার কাছে আমার যা পাওনা ছিল, তা সব আমি পেয়েগেছি। আমি চললাম। ঘটনাটা সত্য কি না জানিনা, ঘটনাটা লিপিবদ্ধ করেছেন, স্বামী রামসুখ দাস।

জীবনে কোনো কিছুই বিফলে যায় না। আজ আপনি যা করছেন, যা ভাবছেন, তাতো একদিন প্রস্ফুটিত হবেই। ভাবনার প্রকার অনুযায়ী, সময়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে। এ জন্মে না হোক পরবর্তী কোনো না  কোনো জন্মে এই কাজ বা ভাবনার ফল আপনাকে ভোগ করতে হবে। এইজন্যই গায়কের ঘরে গায়ক জন্মায়, পন্ডিতের ঘরে পণ্ডিত জন্মায়, তার ইচ্ছে পূরণ করবার জন্য।  আর যদি সে সুযোগ নাও হয়, ভগবান সুযোগ করে দেয়, তার জন্ম জন্মান্তরের ইচ্ছে পূরণের জন্য।  তার সঞ্চিত কর্মফল প্রদানের জন্য ভগবান সুযোগ করে দেয় । তাই মানুষ তার কর্মের কথা  স্মৃতিতে না রাখতে পারলেও, ভগবান ঠিক  সময়মতো ফল প্রদান করে থাকেন। এবং এর জন্য, নিমিত্ত্বও তিনিই তৈরি করিয়ে নেন। যাকে আপনি একদিন, গাড়ি চাপা দিয়েছিলেন, সে আজ আপনাকে গাড়ি চাপা দেবে।  যাকে   আপনি একদিন কালী ছিটিয়ে ছিলেন, সেই আপনাকে কাক হয়ে বিষ্ঠা ছেটাবে,  আপনার মস্তকে। তাই আমাদের চিন্তা ও কর্ম দুটোকেই পরিশীলিত করতে হবে। ধর্মের পথে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে।

ওম শান্তি শান্তি শান্তিঃ।  হরি ওম।

পূর্বজীবন ও পরবর্তী জীবন : (৪)
আমরা কেউ বড়লোকে ঘরে জন্মাই, আবার কেউ গরিবের ঘরে জন্মাই। আমি কেন গরিবের ঘরে জন্মালাম ? ও কেন বড়োলোকের ঘরে জন্মালো। আমি কেন অশিক্ষিতের ঘরে জন্মালাম , ও কেন পন্ডিতের ঘরে জন্মালো । আমি কেন, এই বাংলাদেশে জন্মালাম, ও কেন লন্ডনে জন্মালো। এর কোনো যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর না দিতে পেরে, পন্ডিতরা বলে থাকেন, তোমার কপাল খারাপ, তাই তুমি গরিবের ঘরে জন্মেছো।  ওর কপাল ভালো তাই ও বড়োলোকের ঘরে জন্মেছে। সত্যিই কি ব্যাপারটা তাই, না এর পেছেনে অন্য কোনো কারন আছে। আমি কি ইচ্ছে করলে বড়োলোকের ঘরে, বা পন্ডিতের ঘরে বা কোনো উন্নত দেশে জন্মাতে পারতাম না ?

১৯৬৭-৬৮ সালের কথা বলছি।  আমাদের বাড়ির পাশে ছিল পাঁচুকাকাদের বাড়ি। ওঁরা ৫ বোন দুই ভাই। পাঁচুকাকার বাবা কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতো। তো গ্রামে সব সময় কাজ জুটতো না।  তাই মাসের পর মাস বাইরে থাকতো, পাঁচুকাকার বাবা, আমাদের দাদু। খুব ভালো গলাছেড়ে গান করতো। পাঁচুকাকার বাবা, যখন বাইরে থাকতো মাসে পর পর মাস, তখন কোনো টাকা পাঠাতো না।   আর এই সময়, ওদের খুব খাবারের অভাব হতো। পাঁচু কাকার মা আমার মাকে বাড়ির কাজে সাহায্য করতো। ৬৭-৬৮-৬৯ সালে খাবারের খুব অভাব হয়েছিল। গভীর রাতে রেশন দোকানে লাইন দিয়ে,  চাল, গম, মাইলো, ভুট্টো, কাওন  ধানের চাল, আসলে ইটা এক ধরনের ঘাসের বীজ, ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হতো। পাঁচুকাকার দুই বোন, রিতা ও বিমলা একটা নারকোলের আঁচা নিয়ে আমাদের রান্না ঘরের সামনে বসে থাকতো। ভাতের ফ্যান সংগ্রহ করবার জন্য। ফ্যানের মধ্যে সামান্য একটু লবন দিয়ে তৃপ্তি নিয়ে খেত। লক্ষ্মী তখন সোমত্ত হয়েছে। একটা ব্লাউজ আর একটা পাছা ছেড়া প্যান্ট পড়ে  থাকতো। আমি ভাবতাম, ভগবান মানুষকে তুমি কেন এত কষ্ট দাও। লজ্বা যদি দিয়েছো তবে লজ্বা নিবারণের ব্যবস্থা কেন করতে পারো না তুমি।  ক্ষিদে যদি দিয়েছো, খাবার কেন পাবে না।

এর মধ্যেও দেখেছি, হাটবার দিন, রাস্তায় যেতে যেতে, ইলিশের গন্ধ ভেসে আসছে, কিছু কিছু লোকের বাড়ি থেকে। কেন এই বৈষম্য ? সবাই তো তোমার সন্তান। কাউকে রেখেছো দুধেভাতে, কাউকে রেখেছো উপোস। কেন এমন হয় ? আমরা আজ এই প্রশ্নের জবাব খুঁজবো।
   
এই রহস্যের সমাধান করতে গেলে আগে বুঝতে হবে, আমাদের এই জগৎটা কি ও কী দিয়ে তৈরি।
এই বিশ্ব বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি, জগৎ মূলত তিনটি মৌল বস্তুর সমাহার। প্রথম হচ্ছে, জড় বস্তু বা পদার্থ, দ্বিতীয়ত জ্ঞান বা শক্তি, এবং তৃতীয়ত চৈতন্য।

জড়বস্তু বা পদার্থ : এই জড়বস্তু বা পদার্থের মধ্যে যে মূল বস্তু আছে, তা অপরিবর্তনশীল এবং অক্ষয়। যেমন ধরুন, আমাদের দেহকলসি। এটি পাঁচটি বস্তুর সমাহার। ক্ষিতি অর্থাৎ কঠিন বস্তু, অপ বা জল অর্থাৎ তরল বস্তু, তেজ বা তাপ, মরুৎ অর্থাৎ বায়বীয়, ব্যোম অর্থাৎ আকাশ। কুম্ভকার বা আমাদের শরীরের নির্মাতা এই পাঁচ বস্তুর সমাহার করে, আমাদের এই দেহকলসি নির্মাণ করেছেন। প্রত্যেকটি জিনিস যা আমরা দেখছি, সবই এই পঞ্চবস্তুর সমাহার মাত্র।  যে মৌল পদার্থের কথা আমি বললাম, সেগুলো আগে থেকেই ছিল।  হয়তো এর কোনো আকার ছিল না। বা হয়তো ভিন্ন রূপে ছিল। গনেশ ঠাকুরের মাটি নিয়ে দূর্গা ঠাকুর হচ্ছে, আবার দূর্গা ঠাকুরের  মাটি নিয়ে লক্ষ্মী ঠাকুর হচ্ছে। মাটি সেই একই, নির্মাতা এর রূপ দিচ্ছেন, আবার ভেঙে ফেলছেন, আবার রূপ দিচ্ছেন। আধুনিক বিজ্ঞানও সেই একই কথা বলছে, শক্তি বা মৌল পদার্থ কখনো কেউ নির্মাণ করেন নি। অর্থাৎ মৌল পদার্থ অক্ষয়, এবং একে সৃষ্টি করা যায় না। আসলে সমস্ত মৌল পদার্থ, ও বিশ্বশক্তি, বিশ্বচেতনা দ্বারা সংরক্ষিত। এগুলো না কেউ স্সৃষ্টি করতে পেরেছে, না কেউ ধংশ করতে পারবে। আর এই চৈতন্যশক্তিই আমাদের একমাত্র যা জন্য এই জগৎ আমাদের কাছে প্রতিভাত হচ্ছে।  দেখুন, আমরা যখন চৈতন্যহীন হয়ে পড়ি, তখন এই জগতের কোনো অস্তিত্ত্ব থাকে না। জগৎ আছে কি না সেটা নয়, চৈতন্যহীন আমার কাছে, জগতের কোনো অস্তিত্ত্ব থাকে না। অতয়েব একথা বলা যেতে পারে, একমাত্র চৈতন্যশক্তির বলে আমাদের কাছে, জগৎ প্রতিভাত, নইলে সব অর্থহীন, অদৃশ্য। অতএব জগৎকে বুঝতে গেলে, জানতে গেলে, একমাত্র চৈতন্য শক্তিই সেটা করতে পারে। আর চৈতন্য শক্তিই জীবের জ্ঞান শক্তি,মানুষের জ্ঞানভান্ডার । আর এই চৈতন্য শক্তির আধার হচ্ছে আত্মা।

এখন কথা হচ্ছে, এই আত্মার কোনো ব্যক্তিসত্ত্বা আছে কি না। অর্থাৎ জীবাত্মা বলে কিছু হয় কি না।

       





















     

No comments:

Post a Comment