Monday, 6 January 2020

ঈশ্বর প্রেম কিভাবে হবে ?

ঈশ্বর প্রেম কিভাবে হবে ?

প্রেমহীন মানুষ বাঁচতে পারে না। তবে অবস্থাভেদে, বা জীবনভেদে আমাদের প্রেমের পাত্রটি আলাদা হয় মাত্র। আমরা কেউ ভালোবাসার জন্য মানুষ খুঁজি, কেউ বিষয় খুঁজি।  আবার অল্পকিছু মানুষ আছেন, যারা ঈশ্বরকে খোঁজে। তো ঈশ্বরকে তো সে প্রথমেই খুঁজে পায় না, তাই সে ঈশ্বরীয় সম্মন্ধ যুক্ত বস্তুর পিছনে ছোটে। আর খোঁজাই আসলে আধ্যাত্মিক জীবন। আসলে আমরা সবাই ঈশ্বর সত্ত্বার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর এই চেতনা যখনই আমাদের মধ্যে জেগে ওঠে, তখন আমরা ঈশ্বরীয় স্বভাব নিজের মধ্যে অনুভব করি। সেইজন্য যে কোনো সাধকের পক্ষে, প্রথম যেটা দরকার, সেটা হচ্ছে, সৎ-বস্তূ ও অসৎ-বস্তুর মধ্যে পার্থক্য নিরুপন করা। 

প্রেম বলতে আমরা সাধারণত বুঝি নর-নারীর মধ্যে প্রেম। সত্যকথা বলতে কি, এটাও প্রেম, কিন্তু  এই প্রেমের গতি নিম্নমুখী। আমাদের যেতে হবে, উর্দ্ধে। অর্থাৎ প্রেমের গতিমুখ পরিবর্তন করে প্রেমের উৎসে যেতে হবে। যেখান থেকে প্রেম উৎসারিত হচ্ছে। গোমুখে যেতে হবে। যেখান থেকে প্রেমনদী প্রবাহিত হতে শুরু করেছে ।  এই উৎসেই আছে অফুরন্ত প্রেম। 

এইজন্য আমাদের দরকার একটা শুদ্ধ স্বভাব। আমরা যত  শুদ্ধ স্বভাবকে আয়ত্ত্ব করতে পারবো, ততই আমরা আমাদের অন্তর্নিহিত অন্তরাত্মাকে জানতে পারবো। তার  জন্য আমাদের দরকার প্রবল  ইচ্ছা। ঈশ্বরের ইচ্ছাশক্তির একটা ক্ষুদ্রতম অংশ আছে, আমাদের মধ্যে, এই ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করতে হবে। এই ইচ্ছাশক্তি আমাদের জ্ঞানপিপাসু করে তুলবে। আর এই জ্ঞানের সাহায্যে আমরা মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। জ্ঞান আমাদের অনুভূতি শক্তিকে জাগ্রত করবে। আর অনুভূতি যত আমাদের প্রবল হবে, তত আমরা দেখতে পাবো, আমাদের মন তখন ঈশ্বরের ধারে  কাছে ঘুর ঘুর করছে । আর আমাদের বিষয়-বাসনাগুলো তখন দগ্ধ হয়ে যাবে। জাগ্রত হবে ঈশ্বর ভক্তি। জীবন তখন হবে পবিত্র। একমাত্র ঈশ্বরভক্তিই আমাদের পবিত্র জীবনের অধিকারী করতে পারে। 

কীর্তনের আসরে অনেক মেকি ভক্তকে দেখেছি, চোখের জলে ভাসতে। একটু পরেই চায়ের আসরে খিল খিল করে হাসছে । একটু চেষ্টা করলে, আপনি ভালো অভিনয় শিখতে পারবেন।  এমনকি আপনি আবেগেও ভাসতে পারবেন, কিন্তু ভক্ত হওয়া শেখা যায় না। ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের মিলনের জন্য যখন তীব্র আকুলতা হয়, তখনই জাগে ভক্তি। কীর্তনের আসরে, ভক্তিমূলক গান শুনে, বা করুন সুর শুনে, আমাদের মধ্যে একটা সাময়িক আনন্দের অনুভূতি হয়, যা থেকে আনন্দ-অশ্রূও বেরিয়ে আসতে  পারে। কিন্তু এসব আদৌ ভক্তি নয়। একে আপনি বড়োজোর মিশ্র ভক্তি বলতে পারেন। শুদ্ধ ভক্তি নয়। আর শুদ্ধ ভক্তি যতক্ষন আমাদের না হয়, ততক্ষন ঈশ্বরভক্তি আসবে না। 

   
















  



No comments:

Post a Comment