Saturday, 14 September 2019

ইচ্ছামৃত্যু - আমরা কি আমাদের মৃত্যুকে পিছিয়ে দিতে পারি ?

ইচ্ছামৃত্যু


আমরা কি আমাদের মৃত্যুকে পিছিয়ে দিতে পারি ?

যার জন্ম আছে তার মৃত্যুও আছে।  হাজার সাধ্য-সাধনা করেও কেউ অমরত্ত্বের বর লাভ করতে পারেনি।   এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ইচ্ছে করলে কি আমরা আমাদের মৃত্যুকে ঠেকিয়ে রাখতে পারি ? আমাদের কি ইচ্ছামৃত্যু সম্ভব ? না আমি আত্মহত্যার কথা বলছি না। আত্মহত্যা যে করা যায়, অর্থাৎ যেকোনো সময় যে আমি নিজেকে মেরে ফেলতে পারি, সেটা তো আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি। কিন্তু আমরা কি আমাদের মৃত্যুকে কিছু দিনের জন্য হলেও পিছিয়ে দিতে পারি।

আমরা মহাভারতে পড়েছি, মহাত্মা ভীষ্ম যখন যুদ্ধক্ষেত্রে শর-শয্যায় শায়িত হলেন,  তখন দক্ষিণায়ন চলছে। মহাত্মা ভীষ্ম দক্ষিণায়নে দেহত্যাগ করতে চান নি। উত্তরায়নের অপেক্ষায় নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। অচেতন অবস্থায় নয়, সচেতন ভাবেই তিনি বেঁচে ছিলেন। আর এই সময় যুধিষ্ঠিরকে যে  আপ্তবাক্য শুনিয়েছিলেন,তা  আমাদের কাছে চিরস্বরণীয় হয়ে আছে।

এতো গেলো পূরাণের কথা।  কিন্তু আমরা মহাযোগী গোরক্ষনাথের কথা শুনেছি। এই মহাযোগী নাকি মৃত্যুর সময়  বলেছিলেন, এই দেহ ছাড়ার  পরে আমি সিদ্ধ দেহে অবস্থান করবো, তোমরা আমার দর্শন পাবে, সাহায্য পাবে। এই বলে মন্দির কক্ষে প্রবেশ করলেন, এবং তৎক্ষণাৎ মন্দির কক্ষ এক স্বর্গীয় সুগন্ধে ও স্নিগ্ধতায় ভরে ওঠে। উপস্থিত শিষ্যরা নাকি দেখেছিলো, গোরক্ষনাথের স্থূল দেহ, একটা শুভ্র জ্যোতিমণ্ডলে পরিণত হয়ে গেছে।  এবং খানিক্ষন পরে, তার লোকত্তর সিদ্ধ দেহ উর্ধাকাশে মিলিয়ে যায়। এসব কি গল্পকথা, নাকি এর মধ্যে সত্যতা আছে ?
  
আমরা আদিগুরু শঙ্করাচার্য্যের কথা শুনেছি, তার গুরুদেব ছিলেন, মহাত্মা গোবিন্দপাদ।  তিনি নাকি আসলে মহর্ষি পতঞ্জলি। আর এই মহর্ষি পতঞ্জলি হাজার হাজার বছর  ধরে অপেক্ষা করছিলেন, নর্মদা নদির তীরে, একটা গুহার মধ্যে,  আচার্য্য শঙ্করকে দীক্ষা দেবার জন্য।

আমরা বাবাজির নাম শুনেছি।  যিনি কয়েক'শ  বছর অপেক্ষা করেছিলেন, শ্রী শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয়কে দীক্ষা দেবার জন্য। বাবাজি নাকি শ্যামাচরণ লাহিড়ীর আগের জীবনের গুরুও  ছিলেন।

আমরা যোগাচার্য্য শ্রীমৎ স্বামী শিবানন্দ সরস্বতীর কথা শুনেছি।  তিনি বলেছিলেন, যোগীদের ইচ্ছামৃত্যু হয়।

ভারতবর্ষে হাজার হাজার মহাপুরুষ ছিলেন, এমনকি এখনো হয়তো আছেন, যারা ইচ্ছামৃত্যু বরন করতে পারেন, বা করে থাকেন ।

এখন কথা হচ্ছে এটা কি আদৌ সম্ভব। দেখুন এই ব্যাপারটা বুঝতে গেলে আমাদের প্রাণত্যাগের বা মৃত্যু প্রক্রিয়াটা ভালোভাবে বুঝতে হবে। আর এটাও আমাদের বুঝতে হবে, আমার অর্থাৎ আত্মার কিন্তু মৃত্যু নেই।  কেবল মাত্র স্থূল শরীরের মৃত্যু। আসলে মৃত্যু হয় আমাদের দুটো শরীরের, সেটা হচ্ছে, অন্নময় ও প্রাণময় শরীরের। এর মধ্যে একটা হচ্ছে স্থুল (অনন্ময়) আর একটা হচ্ছে সূক্ষ্ম (প্রাণময়) . বাকি যে শরীর  অর্থাৎ মনময়, বিজ্ঞানময়, ও আনন্দময় শরীরের কিন্তু এক্ষুনি মৃত্যু হচ্ছে না। সে যাই হোক, আমরা যাকে  মৃত্যু বলতে বুঝি, অর্থাৎ আমাদের দেহের মৃত্যু, সেটা কি ভাবে সংগঠিত হয় ?

মৃত্যুর সময় আমাদের কি হয় ? প্রথমে আমাদের খাদ্য গ্রহণ করবার ইচ্ছা চলে যায়। অর্থাৎ আমাদের অন্নময় শরীরের  ক্ষয় বৃদ্ধি হতে থাকে। আমরা জানি আমাদের শরীরে প্রতিদিন অসংখ্য কোষ  জন্মাচ্ছে, আবার প্রতিদিন অসংখ্য কোষ মারা যাচ্ছে। যতদিন কোষ জন্মের হার মৃত্যুর থেকে বেশি থাকে, ততদিন আমাদের শরীর  বৃদ্ধি পেতে থাকে। আবার ঠিক যখন উল্টোটা ঘটে অর্থাৎ যখন  আমাদের কোষের মৃত্যুর হার জন্মের থেকে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন আমাদের শরীরের নাশ হতে থাকে । কিন্তু  এসব সত্ত্বেও, অর্থাৎ না খেয়ে, বা শুধু জল খেয়ে  মানুষ বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারে, কারন কিছু কোষ আছে, যারা সর্বাধিক ৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু এই কোষ গুলো বেঁচে থাকার জন্যও খাদ্যের প্রয়োজন। আর এই খাদ্য শুধু অন্ন নয়, এর মধ্যে আছে প্রধানত বায়ু, তারপরে অগ্নি।

আমাদের জীবন হচ্ছে শ্বাসের খেলা। শ্বাসের ক্রিয়া শুরুতে আমাদের জীবনের শুরু হয়, আবার শ্বাসের শেষে আমাদের জীবন শেষ হয়।  এই শ্বাসের মাধ্যমেই আমাদের শরীরের  সমস্ত প্রক্রিয়া চলে।  পঞ্চভূতের মধ্যে  মরুৎ অর্থাৎ বায়ু সবথেকে শক্তিশালী ও সংযোগকারী। উপনিষদে একেই  ব্রহ্ম বলে আখ্যা  দেওয়া হয়েছে।এবং প্রাণের সঙ্গে সঙ্গে আত্মাও আমাদের শরীর  ছেড়ে চলে যায়।  অর্থাৎ প্রাণের সঙ্গে আত্মার একটা সংযোগ আছে।  প্রাণ আমাদের শরীরের সমস্ত জায়গায়  পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। এই বায়ুকে বা মরুৎকে  পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাণ-অপান-সমান-উদান-ব্যান। আমাদের শরীরে প্রাণের বা বায়ুর ক্রিয়াটাকে একটু বুঝে নেই। শ্বাসের সঙ্গে আমরা যে বায়ু গ্রহণ করি, ফুসফুস এই বায়ুকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করে দেয়।  আর তা হলো :

প্রাণ - অর্থাৎ উইন্ড অফ লাইফ (wind of  life ) : এর কাজ হচ্ছে, শ্বাসগ্রহণ ও শ্বাস ত্যাগ।  অর্থাৎ ফুসফুসকে পরিচালনা করা। আমরা খাবার সঙ্গে সঙ্গে যে খাবার পেটে চলে যায়, এটা এই প্রাণবায়ুর কাজ।
অপান - অর্থাৎ ইন্টেস্টিনাল ওইন্ড (intestinal wind) : এই বায়ু সাধারণত আমাদের নিম্নাঙ্গে প্রবাহিত হয়।  অর্থাৎ মলমূত্র-শুক্র এমনকি সন্তানকে নিচে নাবিয়ে আনতে  সাহায্য করে এই বায়ু।
সমান - সমান কথাটার ইংরেজি হতে পারে smooth  । অর্থাৎ যে বায়ু প্রাণ ও অপান বায়ুর ক্রিয়ার মধ্যে  একটা সমতা বজায় রাখে, তাকে বলে সমান বায়ু ।
উদান - গুট্টুরাল ওইন্ড guttural air  এই উদ্যান বায়ুর সাহায্যেই  আমরা কথা বলি। আবার এই উদ্যান বায়ুর সাহায্যে আমরা কুণ্ডলিনীকে জাগ্রত করতে পারি।
ব্যান - ব্যান বায়ুর সাহায্যে আমরা আমাদের সর্ব শরীরে এমনকি মস্তিষ্কে রক্ত প্রেরণ করতে পারি। এই ব্যান বায়ুর সাহায্যে আমরা রোগমুক্ত হতে পারি।

আমাদের  শরীরের শ্বাসক্রিয়া শুরু হলেতবেই  আমাদের  কৰ্মইন্দ্রিয় (বাক,পানি,পাদ, পায়ু,উপস্থ ) জ্ঞান ইন্দ্রিয় (কর্ন, চর্ম, চক্ষু, জিহবা, ও নাসিকা)  ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। শ্বাস-প্রক্রিয়ার গুরুত্বের কথা চিন্তা করে ভগবান বোধহয়,  স্বাস প্রক্রিয়ার জন্য দুটো অঙ্গ বা দুটো ইন্দ্রিয় ব্যবহার করার ব্যবস্থা করেছেন । এই জন্য  শরীরের অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলো বিশ্রাম নিলেও, নিদ্রা গেলেও এই প্রাণশক্তির ক্রিয়া চলতে থাকে।  কখনই বিশ্রাম নিতে পারে না। দিন-রাত অনবড়ত  কাজ করতে থাকে। যতক্ষন এই প্রাণশক্তি প্রবাহমান থাকে ততক্ষনই আমাদের আয়ু থাকে। প্রাণ যতক্ষন কর্মক্ষম থাকে ততক্ষনই আমাদের জীবিত বলা হয়।  এই প্রাণশক্তির কাজ শেষ হয়ে গেলে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই প্রাণের শক্তিতেই দৃষ্টি-শক্তি, এই প্রাণের শক্তিতেই শ্রবণ শক্তি, এই প্রাণের শক্তিতেই ঘ্রান শক্তি, বাক শক্তি, জ্ঞানশক্তি, পাচন  শক্তি। প্রাণের ক্রিয়া শুরুতে জীবন শুরু হয় - আবার প্রাণের ক্রিয়া শেষে জীবনের শেষ হয়। ত্রিলোকে যা কিছু বর্তমান সবই প্রাণের অন্তর্গত।

অতএব এই প্রাণক্রিয়া আমাদের স্থূল শরীরকে বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের মৃত্যুর সময়, আমাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়শক্তি সংকুচিত হতে থাকে। এবং অপানবায়ু প্রথমে আমাদের শরীর  ছেড়ে দেয়। ফলতঃ মৃত্যুকালীন সময় আমরা মল-মূত্র ত্যাগের উপরে নিয়ন্ত্রণ হারাই। তার পারে ধীরে ধীরে ব্যান, উদ্যান, সমান এবং সব শেষে প্রাণবায়ু আমাদের দেহ ছেড়ে দেয়। এই প্রাণবায়ুর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চেতনশক্তি, বা আত্মা আমাদের স্থূল শরীর ছেড়ে দিয়ে আমাদের সংস্কারকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে থাকে। অর্থাৎ তখন আমরা সাধারণ মানুষরা মনোময় দেহে অবস্থান করি। উন্নত মহাত্মারা মনময় দেহকে  ছেড়ে দেন, তারা বিজ্ঞানময় দেহে অবস্থান করেন। অর্থাৎ বাসনা-সংকল্প বিহীন অবস্থায় শুধু জ্ঞানময় জগতে  তাঁরা অবস্থান করেন।

এতো গেলো আমাদের পার্থিব শরীর  দেহত্যাগের কথা। কিন্তু আমাদের মূল যে প্রশ্ন পার্থিব দেহ ত্যাগের সময় নির্ধারণ কি আমরা নিজেরা করতে পারি? অর্থাৎ এই ত্যাগের প্রক্রিয়াকে আমরা কি পিছিয়ে দিতে পারি ? যদি পারি, তবে তা কি ভাবে সম্ভব হতে পারে ?

আমরা এতক্ষনে বুঝতে পেরেছি, জীবন হচ্ছে শ্বাসের ক্রিয়া। তো এই শ্বাস-প্রশ্বাস যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তবে আমাদের আয়ু আমরা নিজেরাই বর্ধিত করে নিতে  পারি। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের শরীরের ক্ষয় হবে। এই ক্ষয়কে নিবারণ করবার কথা ক্ষমতা কারুর নেই। তবে এই ক্ষয় বৃদ্ধির মাত্রা কমানো যেতে পারে। আমরা আজ সেই আলোচনায় যাবো না। আমাদের প্রশ্ন প্রাণবায়ুকে ধরে রাখা, বা প্রাণবায়ুকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনা । এই শ্বাস-প্রশ্বাস এর প্রক্রিয়া করে আমাদের শরীরের একটা মূল্যবান অঙ্গ যার নাম  ফুসফুস।  অতএব  আমাদের ফুসফুসকে সবসময় সক্রিয় রাখতে হবে।  সুস্থ  সবল রাখতে হবে। তার জন্য আমাদের এই ফুসফুসের ব্যায়াম  করতে হবে। আর সেটা হচ্ছে প্রাণায়াম। আর এই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, আমাদের ফুসফুস যাতে কোনো রকমে সংক্রামিত না হয়।  অর্থাৎ অন্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। আর এই কাজটাই করে থাকেন, আমাদের সাধু-সন্তেরা। অর্থাৎ নেশা না করা। ধোঁয়া আমাদের ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। নির্মল বাতাসের পরিবেশে নিজেকে রাখা।  এইজন্য, নির্জন পাহাড়ে থাকা ফুসফুসের জন্য ভালো।  এইবার মূল যে কাজ সেটা হচ্ছে  অনুলোম-বিলোম বা সহজ প্রাণায়াম দিয়ে শুরু করে, শেষে কুম্ভক  অভ্যাস করা।অর্থাৎ বাতাসকে একবার নিজের শরীরের মধ্যে আটকে  রাখা। আবার বাতাসকে একবার সম্পূর্ণ শরীরের বাইরে আটকে রাখা।   আমরা জানি ধ্যানের একটা প্রক্রিয়া হচ্ছে, শ্বাস-প্রশ্বাস গতিকে পর্যবেক্ষন করা, শেষে তাকে নিজের ইচ্ছে মতো নিয়ন্ত্রণ করা, এবং সব শেষে  শরীরের ভেতরে  বা বাইরে মরুৎকে  আটকে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় নিজেকে সামিল করা। এইভাবে আমরা শ্বাস প্রশ্বাস কে যদি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে  পারি তবে আমরা  আমাদের মৃত্যুকে পিছিয়ে দিতে পারি। আর একটা কথা বলি, ফুসফুসকে ভালো রাখবার জন্য, দুবেলা শঙ্খ বাজানো, ধূপের গন্ধ নেওয়া, বা সুগন্ধি ফুলের বাস নেওয়া, কাঁসর-ঘন্টার ধ্বনি শোনা - খুবই উপকারী।

এখন কথা হচ্ছে, এইসব কথা যদি সত্যি হয়, তবে তো মানুষ অমর  হয়ে যেতে পারে। না পারে না, কারন আমরা জন্মগ্রহণ করি আমাদের বাসনা পূরণের জন্য, সংকল্প সাধনের জন্য। আর স্থুল দেহ ভিন্ন আমাদের সঙ্কল্প বা বাসনা পূরণ সম্ভব সম্ভব নয়।  তো শরীর যখন আমাদের সংকল্প পূরণের অযোগ্য হয়ে যাবে। তখন আমরা অবশ্য়ই এই পার্থিব দেহ ছেড়ে অন্য দেহে চলে যেতে চাইবো। তাই আমরা কখনোই অমর হতে চাইবো না।

সব শেষে একটা কথা বলি, আমরা কি করে বুঝবো যে আমার জন্মের সময় নির্ধারিত আয়ু বাড়লো কি কমলো ? দেখুন আমি জন্মেছি, ১৯৫৪ সালের ৯-ই অক্টোবর শনিবার, সকল ছটায় । আর আমার মারা যাবার কথা ২০৩০ সালের ২০ নভেম্বর, বুধবার, দুপুরের একটু আগে।  না এটা আমার মনগড়া কথা নয়।  আমার কুষ্টিতে সেরকম লেখা আছে। তো আমার কথার সত্যতা প্রমান করবার জন্য আমাদের সবাইকে  অপেক্ষা করতে হবে ২০৩০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত।

এই প্রসঙ্গে তিব্বতিবাবার একটা গল্প বলি, তিব্বতিবাবা কলকাতার এক ভক্তের গৃহে এসেছেন।  সেখানে তিনি তার গুরুদেব পরমানন্দ ঠক্কর বাবার সাধন ঐশর্য্য এবং তার দীর্ঘ আয়ুষ্কালের কথা শোনাচ্ছিলেন। বলছেন, ঠক্কর বাবার বয়স কয়েকশত বৎসর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। একথা শুনে, এক শিক্ষিত ভদ্রলোক বলে বসলেন, বাবাজি আজকের দিনে এসব কথা কেউ বিশ্বাস করবে না, বরং বলবে, এসব "ঠাকুরমার ঝুলির গল্প"।একথা শুনে তিব্বতি বাবা বললেন, শুনে রাখ নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের নামই জীবন। এদুটোর ক্রিয়া বন্ধ  করার কৌশল যে জানে, সে-ই পারে জীবনের গতিকে স্তম্ভন করতে, সেই পারে শত শত বৎসর জীবিত থাকতে। এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। আপন-ভোলা নিরাসক্ত মনে যদি সংকল্প জেগে ওঠে, শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্রিয়া যায় নিরুদ্ধ হয়ে, আর জীবনের পরিধিও হয়ে যায় বিস্তৃততর। আমার গুরুদেবের শক্তির পরিমান তোরা শালা কি বুঝবি ? (ভারতের সাধক - খন্ড - ৬ পৃষ্ঠা -১৯০)

 
ওম শান্তি শান্তি শান্তিঃ।


No comments:

Post a Comment