Saturday, 3 October 2020

ধর্ম্মিক যদি বৈজ্ঞানিক হতো, বা বৈজ্ঞানিক যদি ধর্ম্মিক হতো।

                                    ধর্ম্মিক যদি বৈজ্ঞানিক হতো, বা বৈজ্ঞানিক যদি ধর্ম্মিক হতো। 

আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস করি, কিন্তু ঈশ্বরে আস্থা রাখতে পারি না। আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, কারন আমরা জীবনে সফলতা পাই না। আবার ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বে আস্থা রাখতে পারি না, কারন ঈশ্বর কাউকেই সম্পূর্ণ সফল করেন না। আজ থেকে আমরা এমন সব কথা শুনবো, যা আমাদের জীবনে সফল এনে দিতে পারে। জীবনটাকে বদলে দিতে পারে। একটা কথা বিশ্বাস করুন, প্রত্যেকটি মানুষ সফল হতে পারে, সফল হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে। আমরা জন্ম গ্রহণ করেছি, উন্নত হবার জন্য। আমরা সবাই সুস্বাস্থের অধিকারী হতে পারি, আমরা সুখে স্বাছন্দে বেঁচে থাকতে পারি, আমরা সাহসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারি। আমরা সবাই অর্থনৈতিক স্বাছন্দ ভোগ  পারি। আমরা কেউ সারাজীবন অসুস্থ থাকবার জন্য জন্ম গ্রহ করিনি।  আমরা কেউ সারাজীবন গরিব হয়ে থাকবার জন্য জন্ম গ্রহণ করিনি। আমরা কেউ সারাজীবন ভয়ে ভয়ে জীবন কাটানোর জন্য জন্ম গ্রহণ করিনি। আমরা কেউ নিঃসঙ্গ জীবন কাটাবার জন্য জন্ম গ্রহণ করিনি। আমরা কেউ সারা জীবন দুশ্চিন্তা নিয়ে জীবন কাটাবার জন্য জন্ম গ্রহণ করিনি। আমরা যদি অসফল হয়, আমরা যদি উন্নত না হতে পারি, তবে জানবেন আমাকে সৃষ্টি করবার পিছনে ঈশ্বরের যে উদ্দেশ্য তা ব্যর্থ। আর ঈশ্বর কখনো ব্যর্থ হতে পারেন না। আমাদের জীবন হবে সৃষ্টিধর্ম্মি।  আমাদের জীবন হবে সদাহাস্যময়।  আমাদের জীবন হবে নিশ্চিন্ত। আমাদের এই যে দারিদ্র, আমাদের এইযে অসুখ-বিসুখ, আমাদের এই যে দুর্ভোগ, এটা আমাদের জীবন ধর্ম্মের বিপরীত দিক।   তুমি এর থেকে বেরিয়ে এস, সুখী সমৃদ্ধ জীবন উপভোগ করো। ঈশ্বর এটাই চান। ঈশ্বর তার  কোনো সন্তানকে কষ্ট   দিতে চান না। তিনি আমাদের উন্নতি চান, তিনি আমাদের জীবনের সফলতা চান। ভালো থাকায় জীবনের ধর্ম্ম। যত তোমার বয়স বাড়বে, তত তুমি সফলতার দিকে এগিয়ে যাবে, তত তুমি উন্নতি করবে,    ভগবান এটাই আশা করে থাকেন।  ধর্ম্মিক যদি বৈজ্ঞানিক হতো, বা বৈজ্ঞানিক যদি ধর্ম্মিক হতো, তাহলে দুটো জিনিস হতে পারতো, এক হচ্ছে, ধর্ম্ম কখনো মানুষকে প্রতারিত করতো না। আবার বিজ্ঞান কখনো মানুষের অকল্যাণে ব্যবহার করতে পারতো না। ধর্ম্মের প্রাথমিক প্রাথমিক শর্ত  হলো বিশ্বাস, আর বিজ্ঞান এগিয়ে চলে সন্দেহের দৃষ্টিকোন থেকে। 

মানুষ ক্ষুধা, ব্যাধি ও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। শুধু মানুষ কেন সমস্ত জীব এই লড়াই করেই পৃথিবীটাকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে। ধর্ম্ম মানুষকে মানসিক দিক থেকে নিঃস্ব করবার জন্য সমস্ত চেষ্টা করে থাকে। মানুষ আসলে দুর্বল, মানুষ আসলে অসুরক্ষিত।  তাই সে একদিকে যেমন একটা কাল্পনিক সুরক্ষার বেড়া তৈরী করতে চায় , যা সামাজিক সুরক্ষা নামে  পরিচিত, অন্যদিকে মানুষ প্রকৃতির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে সবল করতে চায়, যাকে  বলে বিজ্ঞান । 

এক ফেরিওয়ালা কাপড় বিক্রি করে।  তো তার কাপড়গুলো মোটা বলে, অনেকে তাচ্ছিল্য করে। তো সে  এক ব্রাহ্মণ পন্ডিতের কাছে গেলো । আর তার সমস্যার সমাধান চাইলো। পণ্ডিত সমাধান একটা দিলো বটে, কিন্তু লাভের  অর্ধেক দাবি করে বসলো। এই পণ্ডিত  সূক্ষ্ণ কাপড় তৈরি করে দেবে, সেই কাপড় এতটাই সূক্ষ্ম হবে, যে সাধারণ চোখে দেখা যাবে না। যার আত্মা শুদ্ধ, পবিত্র, যারা বংশানুক্রমিক ভাবে শুদ্ধ অর্থাৎ যাদের পূর্ব্বপুরুষ স্বর্গে বাস করেন, তারাই এই কাপড় দেখতে পারবেন।  অন্য কেউ এই কাপড় দেখবার যোগ্য নন। আর এই কাপড় তারাই কিনতে পারবেন, যারা ধনবান।  

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মানুষ একটা কিটসম।  জীব  এতটাই ক্ষুদ্র, আর বিশ্বব্রহ্মান্ড এতটাই বৃহৎ যে এই স্বল্প-সময়ের জীবনে তাকে জানা যায় না। আর স্বল্প-জীবনকালে ভোগ করতে হয়, তার হাজার হাজার রোগ-ভোগ।  নানান রকম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাকে এগুতে হয়। আর তথাপি সে এমন জায়গায় পৌঁছায় যেটা মৃত্যুগহ্ববর ছাড়া কিছু নয়। পৃথিবীটা তার কাছে অজানা, অচেনা - সর্বত্র লুকিয়ে আছে ভয়, কেউ তাকে সুরক্ষা দিতে পারে না। ঠিক এই  সময় তার হাতে একটা সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বর ধরিয়ে দাও। যা সে অন্তরের  ভিতর থেকে চাইছিলো।   ব্যাস কেল্লা ফতে। এই ঈশ্বরকে সে ফেলে দিতে পারে না, একে সে সন্দেহও করতে পারে না। মানুষের যখন নারভাস সিস্টেম ফেল করেছে, এই সময় গ্রাম্য কুশলী পুরোহিত তাকে ঈশ্বর ধরিয়ে দেয়। এই পুরোহিত রাজনৈতিক নেতাদের থেকেও অধিক শক্তিশালী। আমাদের দেশে দেখেছি, রাজনৈতিক নেতারাও  ইলেক্শনের আগে পুরোহিতদের কাছে, মন্দিরে মন্দিরে হত্যা দিচ্ছে।  এর পরে পাঁচ বছর সে এইসব ভুলে থাকে। তখন সে পুরোহিতদেরও তোয়াক্কা করে না। আবার ইলেকশন এলে পুরোহিতেরা আবার এদের দেখা পায়।



     













     

No comments:

Post a Comment