ধর্ম্ম ও বিজ্ঞান
অবিশ্বাস, সন্দেহ বিজ্ঞানীর ধর্ম্ম। বিজ্ঞান বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করতে পারে। তার নাড়ি-নক্ষত্র জানতে পারে। এমনকি এই খবর সে অন্যকে জানাতে পারে। আজকের সভ্যতা বিজ্ঞানের সভ্যতা। আর এই কারণেই চারিদিকে সন্দেহ। নগর সভ্যতা সন্দেহের সভ্যতা। বিজ্ঞান বিষয়কে নিজের অধীনে নিয়ে আসে। এমনকি প্রকৃতিকে সে নিজের বসে নিয়ে আসতে পারে। একমাত্র সন্দেহ প্রবন মানুষ, অবিশ্বাসী মানুষ বিজ্ঞানী হতে পারে। আবার বিশ্বাস আমাদেরকে ধর্ম্মপথে নিয়ে চলে। বিশ্বাসই ধর্ম্মের মূল কথা। ধর্ম্ম আমাদের অস্তিত্ত্বের অভিজ্ঞতা প্রদান করে থাকে। বিষয়ের উপরে, বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গি ও একই বিষয়ের উপরে ধার্ম্মিকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা। এদের দুজনের সঙ্গে আদৌ কোনো সংযোগ নেই। অবিশ্বাসী কখনো ধার্ম্মিক হতে পারে না। আর যার মধ্যে সন্দেহ নেই, সে কখনো বিজ্ঞানী হতে পারে না। মহাত্মা বলছেন, এদের দুজনের সাথে কখনো মিলন হতে পারে না কারন এরা দুজনই এক। মুদ্রার এপিঠ ও পিঠ মাত্র। দুটোই পর্যবেক্ষন। তো যার মধ্যে কোনো ফারাক নেই, তাদের মধ্যে কোনো সাঁকো তৈরী হতে পারে না। সাঁকো তৈরী করতে গেলে, দুজনকে আলাদা করতে হয়।
কিন্তু কথা হচ্ছে, বিশ্বাস তো অজ্ঞানতায় ঢাকা। বিশ্বাস কখনো সত্যকে জানতে চায় না। বিশ্বাস আপনাকে একটি বিশেষ মতবাদকে অযৌক্তিকভাবে দৃঢ় করে দেবে। বিশ্বাস আপনাকে একটা জ্ঞানের বিভ্রম ঘটাবে। এই ভ্রমাত্মক জ্ঞানের অধিকারী হয়ে আপনি নিজেকে মিথ্যে জ্ঞানী ভাবতে শুরু করবেন। কেবলমাত্র বিশ্বাসের উপরে যা কিছু প্রতিষ্ঠিত তা সবই মেকি, বাজে। তথাকথিত ধর্ম্ম তাই বার বার করে বিশ্বাসের কথা বলে থাকে। আর অন্যদিকে বিজ্ঞান সব কিছুকে সন্দেহের চোখে দেখে, বিস্ময়ের চোখে দেখে, জিজ্ঞাসার চোখে দেখে, প্রশ্নের সম্মুখীন করে দেয় সব কিছুকে। তাই বিজ্ঞান যতদিন সন্দেহ না ছাড়তে পারবে, আর ধর্ম্ম যতদিন শুধু অন্ধ বিশ্বাসকে আঁকড়ে থাকবে, ততদিন বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্ম্মের মিলন হতে পায়ে না। জল থেকে ডাঙায় যাবার জন্য কোনো সাঁকো হতে পারে না। ডাঙা থেকে ডাঙায় যাবার জন্য ব্রিজ তৈরী করা যেতে পারে ।
আমাদের দৃষ্টিতে দুটোই বিজ্ঞান। বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষ জ্ঞান। আবার অধ্যাত্ম জগতে একটা কথা আছে প্রজ্ঞা, যার অর্থ হচ্ছে, প্রকৃষ্ট জ্ঞান। এই প্রকৃষ্ট জ্ঞানের সাধনায় করে থাকেন যোগীপুরুষগন। জ্ঞানযোগের কথা আমরা সবাই শুনেছি, যা আসলে প্রকৃত ধার্ম্মিকদের লক্ষ। বিজ্ঞানের দৃষ্টি বাইরের দিকে। বাইরের জগতের দিকে। আর ধর্ম্মের গতি অন্তরের দিকে, অন্তর্জগতের দিকে। একজনের দৃষ্টি কর্তার দিকে আর একজনের দৃষ্টি কর্ম্মের দিকে। তাই যিনি সত্যিকারের ধর্ম্মিক তাকেও সন্দিহান হতে হবে, বিজ্ঞানীর মতো। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছিলেন, যথার্থ গুরুর সেবা করবে, গুরুদেবকে শ্রদ্ধা করবে, কিন্তু গুরুদেবকে সদা প্রশ্নের সম্মুখীন করে দেবে । তাকে প্রশ্ন করে, জবাব নিয়ে নেবে। ধর্ম্ম মানে শুধু অন্ধ বিশ্বাস বা অন্ধ অবিশ্বাস নয়, ধর্ম্ম মানে নিজেকে জানা। ধর্ম্ম মানে অন্তর জগতের জ্ঞান।
বিজ্ঞান ও ধর্ম্ম দুটোই মহৎ। দুটোই আলাদা আলাদা ভাবে সৌন্দর্যে ভরপুর। বয়সের ভারে যিনি জ্ঞানবৃদ্ধ হয়েছেন, আর যে যুবক বুকের মধ্যে অজস্র প্রশ্ন নিয়ে ছটফট করছেন, দুজনের পরিণতি একই। একটা শিশু যখন জন্ম গ্রহণ করে, তখন সে কোনো বিশ্বাস নিয়ে জন্মায় না। বরং শিশু জন্ম থেকেই প্রশ্ন করতে থাকে। সন্দেহ প্রকাশ করতে থাকে বিস্ময় প্রকাশ করে থাকে। শিশু কখনো সে বিশ্বাসের কথা বলে না। সন্দেহ, প্রশ্ন আমাদের জন্মগত। আর বিশ্বাস হচ্ছে পিতা-মাতা-সমাজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-আর তথাকথিত ধর্ম্ম দিয়ে থাকে। এঁরা সবাই আমাদের অজ্ঞানের শিক্ষা দিচ্ছে। এরা সবাই আমাদের বোকা বানিয়ে রাখতে চাইছে। এরা মানবতাকে অন্ধকারে ঢেলে দিচ্ছে। এর অবশ্য একটা কারন আছে, যার বাস্তব জ্ঞান নেই, তাকে ঠকানো সহজ। নির্বোধকে শোষণ করা সহজ। দাস বানিয়ে রাখা সহজ। গরিবকে, দুর্বলকে, অজ্ঞানীকে সমস্ত ভাবে নিজের কাজে লাগানো যায়, এই সত্যটি আমাদের তথাকথিত ধর্ম্মিকব্যক্তিগন আয়ত্ত্ব করতে পেরেছিলেন।হাজার বছরের পুরাতন এই তথাকথিত নিতান্ত বিশ্বাসের ধর্ম্ম সত্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তারা সত্যের নামে সত্য থেকে আমাদেরকে দূরে নিয়ে যেতে চায়। এবং বলা যেতে পারে, এখনো পর্যন্ত তারা এই কার্য্যে সার্থক। কিন্তু সময় এসেছে, সত্যকে খুঁজে বের করবার। এবং তথাকথিত মেকি ধর্ম্মকে কবর দেবার সময় এসেছে। আর যত তাড়াতাড়ি এটা করা যায়, ততই মানব জাতির মঙ্গল।
প্রথম কথা কেন আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে ? আপনি আপনার চোখের সামনে যা কিছু দেখছেন, আপনি যা কিছু শুনছেন, সে-তো সত্য। আপনি যে ফুলের গন্ধ অনুভব করেছেন, সে সম্পর্কে কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে যে এই ফুলের গন্ধ আপনি বিশ্বাস করেন কি না। তবে সেই প্রশ্ন আপনার কাছে হবে হাস্যস্কর। এখানে বিশ্বাসের কোনো প্রশ্ন ওঠেই না। জ্ঞান কখনো বিশ্বাসের অপেক্ষা করে না। অনুভব কখনো বিশ্বাসের অপেক্ষা রাখে না। বধির শব্দকে বিশ্বাস করে, অন্ধ আলোকে বিশ্বাস করে, রঙকে বিশ্বাস করে। আপনি শুনে আশ্চর্য্য হবেন, অন্ধ শুধু আলোকে বিশ্বাস করে না, সে অন্ধকারকেও বিশ্বাসই করে থাকে। কারন সে আলো বা অন্ধকারকে কাউকেই সে দেখতে পায় না। আমরা ভাবি, অন্ধ বোধহয় অন্ধকারকে দেখে থাকে। কিন্তু সত্য হচ্ছে দেখতে গেলে চোখ লাগে। অন্ধকারকে দেখতে গেলেও চোখ লাগে। চোখের ধর্ম্ম হচ্ছে দেখা। যার চোখ নেই সে আলোও দেখতে পায় না অন্ধকারও দেখতে পায় না। আলো ও অন্ধকার আসলে একই বস্তুর এপিঠ ওপিঠ। যার চোখ নেই, সে অন্ধকার বা আলো কোনোটাই দেখতে পায় না। সে শুধু বিভ্রমের মধ্যে হাতড়ে বেড়ায়।
অন্ধকার বা আলো কেউই সম্পূর্ণ নয়। আলোর বিপরীতে অন্ধকার অবস্থান করছে। আলোর পরিমান কমে গেলে, আমাদের অন্ধারকার লাগে, আবার অন্ধকারের পরিমান কমে গেলে আমরা আলোর দেখা পাই। কেবলমাত্র ডিগ্রির পার্থক্য। আমাদের চোখের একটা নির্দিষ্ট পরিসর আছে। আলোর তীব্রতা বেড়ে গেলে আমরা দেখতে পাই না। আবার অন্ধকারের তীব্রতা বেড়ে গেলে আমরা দেখতে পাই না। ঠিক তেমনি আলোর তীব্রতা কমে গেলেও আমরা দেখতে পাই না, বা অন্ধকারের মধ্যেও আমরা দেখতে পাই না। আমাদের সামনে অসংখ্য ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে, বা অসংখ্য রেডিও তরঙ্গ বেসে বেড়াচ্ছে। যা আমরা দেখতে বা শুনতে পাচ্ছি না। রেডিও তরঙ্গকে শুনতে গেলে শুধু কান তা পারবে না। এর জন্য দরকার রেডিও। আবার ছবির তরঙ্গ দেখতে গেলে আমাদের দরকার দূরদর্শন যন্ত্র। এই রেডিও বা দূরদর্শন এমন কারিগরি দিয়ে তৈরী, যা সে শব্দকে আমাদের কান দ্বারা শুনবার উপযোগী করে দেয়, আবার চোখ দ্বারা ছবিকে দেখবার উপযুক্ত করে দেয়। ঠিক এই প্রক্রিয়াটাই আমাদের অনুভূতির জগতে কাজ করে থাকে।
অন্ধ মানুষকে জোর করে বিশ্বাস করানো হয়, যে আলো বা অন্ধকার আছে। আসলে যে দেখতেই পায় না, সে আলোকেও দেখতে পায় না, আবার অন্ধকারকেও দেখতে পায় না। কেবল বিশ্বাস করে। তার এই অন্ধ বিশ্বাসকে দূর করতে গেলে দরকার একজোড়া চোখ। হাজার-এক বক্তৃতা, গুরুগম্ভীর জ্ঞান তাকে কখনোই আলো বা অন্ধকার সম্পর্কে জ্ঞাত করাতে পারবে না। কোনো দর্শন শাস্ত্র তাকে এই চোখ দিতে পারবে না এর জন্য দরকার চিকিৎসক, চোখের চিকিৎসক । আলো আছে, বা অন্ধকার আছে, এই বিশ্বাস তাকে কখনোই দর্শনশক্তি এনে দিতে পারবে না। অন্ধের দর্শনশক্তি এনে দিতে পারে, একমাত্র চক্ষুচিকিৎসক, উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে ।
যেকোনো বিষয়ে কেবলমাত্র অন্ধ বিশ্বাস, সেই বিষয়ে আপনার অজ্ঞানতার পরিচারক। আত্মা আছে, ভগবান আছেন, স্বর্গ আছে, নরক আছে, ইত্যাদি ইত্যাদি সম্পর্কে যে বিশ্বাস আপনার মধ্যে গড়ে উঠেছে, সেগুলো আসলে এই বিষয়ের উপরে আপনার অজ্ঞানতা ছাড়া কিছু নয়। ভগবান আছেন, এই বিশ্বাস তথাকথিত ধর্ম্মিক ব্যক্তিগন সমাজকে যুগ যুগ ধরে বলে এসেছে। আর এই কথা বারবার শুনতে শুনতে আমাদের মধ্যে ভগবান সম্পর্কে একটা কাল্পনিক ধারণার জন্ম দিয়েছে। যার সম্পর্কে আমাদের কোনো জ্ঞান হতে পারে নি, অথচ বিশ্বাস জন্মে গেছে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, যারা বলছেন, ভগবান আছেন, তারা নিজেরাও কোনোদিন সেই ভগবানের মুখ-দর্শন করেন নি। তারাও গুরু-পরম্পরায় শুনে এসেছেন, ভগবান আছেন। ভগবান সম্পর্কে সত্যিকারের খোঁজও তারা কোনোদিন করেন নি। আরো একটা কথা হচ্ছে, যার সম্পর্কে বলা হচ্ছে, অর্থাৎ ভগবান, সেই ভগবানও কখনো এগিয়ে এসে বলেননি, যে দেখো আমি আছি, বা আমি নেই। ভন্ড ধর্ম্মিক বলছে, জগৎ মিথ্যা। ভগবান সত্য। কিন্তু যাকিছু আপনি দেখছেন, যাকিছু আপনি শুনছেন, যাকিছু আপনি স্পর্শ করছেন, তা ভগবান বই কিছু নয়। কিন্তু আমরা মানুষের মধ্যে ভগবানকে খুঁজি না। আমরা জগতের মধ্যে ভগবানকে খুঁজি না। আমরা নিষ্ফলা অন্ধকারের মধ্যে হাতড়ে মরছি।
আসলে আমরা খোঁজ করতে ভয় পাই। কেননা খোঁজ করতে গেলে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। যত সহজে বিশ্বাসে ভগবানকে পাওয়া যায়, খোঁজ করতে গেলে তত সহজে পাওয়া যায় না। বিশ্বাস ছাড়া যদি ভগবানকে পাওয়া যেত, তবে সমস্ত তথাকথিত ধর্ম্মিক ব্যক্তি বলতেই পারতেন, অনুসন্ধান করে দেখো। তথাকথিত ধর্ম্মিক ব্যক্তি কখনো এই খোঁজের কথা বলবেন না। কিন্তু সত্যিকারের ধর্ম্মিকব্যক্তি ভগবান আছেন কি নেই সেই কথা কখনো বলেন না, বলেন, তুমি খুঁজে দেখো। আর খোঁজার কাজটি করে থাকে বিজ্ঞান, বৈজ্ঞানিক, যিনি সত্যিকারের সাধক। সমস্ত ধৰ্ম এই খোঁজার কথা বলতে গিয়ে, নিজেরাই পথ হারিয়েছে। কেউ বলছেন, এদিক দিয়ে যাও , তো কেউ বলছেন, না-না ওদিকে নয় এইদিকে। এই দিকভ্রষ্ট ধার্ম্মিকগন নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু করে দিয়েছেন। আর তাই আমরা দেখতে পারি, হাজার এক সম্প্রদায়, হাজার হাজার মতবাদ। সবাই বলছেন, আমার মতই উৎকৃষ্ট। আমার মতই শ্রেষ্ট। তাই আমরা দেখতে পাই, তথাকথিত ধর্ম্ম বিজ্ঞানকে ভয় পায়, CBI-কে ভয় পায়। কেননা পাছে ভগবানের খোঁজ শুরু হয়ে যায়। এইসব ভন্ডরা জানে, আমরা যে পথের কথা বলেছিলাম, আমরাও সেই পথে কোনোদিন পা রাখিনি, এই পথের কথা গুরু-পরম্পরায় আমি শুনেছি মাত্র। কোনোদিন সেপথে যাবার কথা মনেই আসেনি।
মাঝে মাঝে মনে হয়, তথাকথিত ধর্ম্মিকগন যেমন করুনার পাত্র, তেমনি বিজ্ঞান ততোধিক অবজ্ঞার বিষয়, কেননা এই বিজ্ঞান যতনা বাইরের বস্তুর দিকে নজর দিয়েছে, নিজের দিকে তত অন্ধ থেকেছে। বৈজ্ঞানিক সবকিছুকে জানতে চায়, কেবল নিজেকে ছাড়া। বিজ্ঞান সব কিছু নিয়ে অনুসন্ধান করে থাকে, কিন্তু নিজের ধর্ম্ম বিষয় নিয়ে সে কখনো অনুসন্ধান করে না। বিজ্ঞান বহির্জগৎ সম্পর্কে অনুসন্ধানে ব্যস্ত, অন্তর্জগৎ সম্পর্কে উদাসীন। পরীক্ষাগারে বসে জিজ্ঞাসু সমস্ত বদ্ধমূল পুরোনো ধারণাকে পাশে সরিয়ে রেখে, বস্তুর পরীক্ষা করছে। কিন্তু কখনো তার মধ্যে প্রশ্ন জাগেনি, যে কে এই পরীক্ষা করছে ? কিন্তু নিজেকে সেই বদ্ধমূল ধারণার মধ্যেই আবদ্ধ রাখছে, যে সত্য বাইরে লুকিয়ে আছে। সত্য বাইরে নয়, সত্য আছে ভিতরে। সত্য বিজ্ঞানে নয়, সত্য আছে বিজ্ঞানীর মধ্যে। বিবেকানন্দ বলছেন, বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ? জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। বিবেকানন্দ আরো বলছেন, বিশ্বাস একটা সুন্দর অন্তর্দৃষ্টি এবং এটাই একমাত্র ব্যাপার যা মানসিক প্রশান্তিকে রক্ষা করতে পারে। ... কিন্তু এর মধ্যে একটা বিপদ নিহিত আছে, যা কিনা ধর্ম্ম-উন্মত্ততা সৃষ্টি করে ও উন্নয়নে বাধা প্রদান করে।
তো অন্ধ বিশ্বাস যদি করতেই হয়, তবে বিশ্বাস করুন, আমরা প্রত্যেকেই সেই মহান সত্তার অংশ। আমরা সবাই ঈশ্বরের প্রতিনিধি। আত্মায় আত্মায় কোনো পার্থক্য নেই, পার্থক্য শুধু অজ্ঞানতার - কারন জ্ঞানের সূর্য আমরা অন্ধ বিশ্বাস বা অন্ধ অবিশ্বাসরূপ মেঘ দিয়ে ঢেকে রেখেছি। আপনি বস্তুবাদী হন, বা দার্শনিক হন, বিজ্ঞানী হন বা আধ্যাত্মিক হন, জানবেন, আমরা সবাই এই সমাজের অংশ, তাই সমাজের উন্নতিতেই আপনার আমার উন্নতি। পা ফুললে জানবেন, গোদ হয়েছে, পেট ফুললে জানবেন, চর্বি হয়েছে, - এর কোনোটাই সুস্বাস্থের লক্ষণ নয়। শরীরের সর্বত্র রক্তের প্রবাহ ছড়িয়ে দিতে হবে, তবেই স্বাস্থ ভালো হবে।
ওম শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ। হরি ওম।
No comments:
Post a Comment