মহাভারতে মহাদেব শিব স্তোত্র
অনুশাসনপর্ব্ব :
চতুর্দশ অধ্যায়
ভগবান বাসুদেবের পুত্র লাভের জন্য মহাদেবের আরাধনা
যুধিষ্ঠির তার পিতামহকে অর্থাৎ ভীষ্মকে বললেন : হে পিতামহ আপনি সুর-অসুর-গুরু বিশ্বরূপ সর্ব্ব অন্তর্যামী ভূতপাবন ভগবান মহাদেবের নাম ও ঐশ্বর্য্য সমুদয় সম্যকরূপে অবগত আছেন। আপনি যদি দয়াকরে, সেইসব অমৃতকথা সবিস্তর বলেন।
ভীষ্ম বললেন, হে বৎস সেই দেবাদিদেব মহাদেবের গুনকীর্তন করা আমার সাধ্য নয়। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, ইন্দ্র ইত্যাদি দেবগনের যিনি সৃষ্টিকর্তা, সে ভগবান সর্ব্বগত হয়েও সর্বত্র লক্ষিত হন না। তিনি প্রকৃতি ও পুরুষের অতীত, তাই ব্রহ্মাদি থেকে পিশাচ পর্যন্ত সকলেই তার উপাসনা করে থাকেন। তত্ত্বদর্শী যোগবিদ মাহর্ষিগনও কেবলমাত্র সূক্ষ্ম অথচ স্থুল অক্ষর-পর-ব্রহ্ম-স্বরূপ মহাদেবেরই চিন্তা করেন। ঐ আদি দেবাদিদেব প্রথমে আত্মতেজঃ প্রভাবে প্রকৃতি ও পুরুষকে নির্মাণ করেন। এবং তাদের দ্বারা প্রজাপতি ব্রহ্মাকে সৃষ্টি করেছেন। জন্ম-মৃত্যু-জরা বশীভূত আমার মতো মানুষেরা কখনো সেই মহাত্মাকে জেনে, তাঁর গুন্-কীর্তন করতে পারে না। আমাদের মধ্যে বর্তমান, যদুকুলশ্রেষ্ট একমাত্র ভগবান, যিনি শঙ্খ-চক্র-গদাধারী সেই বাসুদেবই তাঁর দিব্য চক্ষু দ্বারা, তাঁকে দেখতে পারেন। এই মহাত্মা বাসুদেব, এককালে বদ্রিকাশ্রমে হাজার বছর যাবৎ সেই সনাতন মহেশ্বরের আরাধনা করেছিলেন। এবং সেই সর্বভুতেশ্বর জগৎব্যপ্ত মহেশ্বের প্রসাদে তাঁরই প্রিয়তম হয়েছেন। এই যোগেশ্বর প্রত্যেক যুগে পরম ভক্তি সহকারে, সেই চরাচর গুরু দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা করে থাকেন। তাঁর প্রীতি সম্পাদন করে থাকেন। এই বাসুদেবই কিছুদিন আগে, পুত্র লাভের জন্য, সেই আদিদেবের আরাধনায় নিযুক্ত থেকে, তাঁর পরম ঐশ্বর্য্য প্রতক্ষ্য করেছেন। সুতরাং একমাত্র বাসুদেবই পারেন, সেই সনাতন মহাত্মার নাম, গুন্, ও ঐশ্বর্যের সবিস্তর কীর্তন করতে। অতএব, হে ভগবান বাসুদেব, মহারাজ যুধিষ্ঠিরের এই অভিলাষ পূর্ন করো। পুরাকালে, ব্রহ্মযোনি মহাতপস্বী তন্ডি ব্রহ্মলোকে ব্রহ্মার নিকট ভগবান ভূতনাথের যে সহস্রনাম কীর্তন করেছিলেন, তুমি আজ এই বেদব্যাস সহ মহাত্মাগণ সম্মুখে সেই আনন্দময়, সনাতন, জ্ঞানস্বরূপ বিশ্বস্রষ্টা ভগবান ভূতনাথের মাহাত্ম কিন্তান করো।
ভগবান বাসুদেব বললেন, হে শান্তনু-তনয় ভগবান ভূতনাথের কাজ, তার গতি, তার আদি অন্ত, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, তত্ত্বদর্শী মুনিগন এমনকি ব্রহ্মাদি দেবতা পর্যন্ত জানতে বা বুঝতে পারেন না। তথাপি আমি এখন সেই যজ্ঞপতির সামান্যকিছু গুন্ কীর্তন করছি, আপনারা শুনুন।
এই বলে, ভগবান বাসুদেব, পবিত্রচিত্তে আচমন করলেন। তারপর বললেন, আমি আমার পুত্র শাম্বকে লাভ করবার জন্য যোগবলে ভগবান ভূতনাথের সাক্ষাৎ লাভ করেছিলাম। প্রথমে আমি আপনাদের সেই কাহিনী বলবো, তারপরে, সেই পতিতপাবন ভূতনাথের নাম সমুদয় কীর্তন করবো। আপনারা শুনতে থাকুন।
মহাবীর প্রদ্যুম্ন দ্বারা শম্বর-দৈত্য নিহত হবার বারো বছর পরে, একদিন, জাম্ববতী, রুক্মিনীর গর্ভজাত আমার পুত্র প্রদ্যুম্ন, চারুদেষ্ণ, সুচারু, চারুবেশ, যশোধর, চারুশ্রবা, চারুযশা, শম্ভূ প্রভৃতি পুত্রদের দেখে,পুত্র অভিলাষী হয়ে, আমার কাছে এসে বললো হে নাথ, আমাকে একজন আপনার মতো গুণবান, পরমসুন্দর, মহাবল পরাক্রান্ত পুত্র দেন করুন। এই ত্রিলোকে, আপনার অসাধ্য কিছু নেই, আপনি ইচ্ছে করলে লোকসমূদায় সৃষ্টি করতে পারেন। এর আগে আপনি বার বছর কঠোর ব্রত অনুষ্ঠান করে ভগবান পাশুপতির আরাধনা করেছিলেন।
ভগবান বাসুদেব বললেন, হে শান্তনু-তনয় ভগবান ভূতনাথের কাজ, তার গতি, তার আদি অন্ত, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, তত্ত্বদর্শী মুনিগন এমনকি ব্রহ্মাদি দেবতা পর্যন্ত জানতে বা বুঝতে পারেন না। তথাপি আমি এখন সেই যজ্ঞপতির সামান্যকিছু গুন্ কীর্তন করছি, আপনারা শুনুন।
এই বলে, ভগবান বাসুদেব, পবিত্রচিত্তে আচমন করলেন। তারপর বললেন, আমি আমার পুত্র শাম্বকে লাভ করবার জন্য যোগবলে ভগবান ভূতনাথের সাক্ষাৎ লাভ করেছিলাম। প্রথমে আমি আপনাদের সেই কাহিনী বলবো, তারপরে, সেই পতিতপাবন ভূতনাথের নাম সমুদয় কীর্তন করবো। আপনারা শুনতে থাকুন।
মহাবীর প্রদ্যুম্ন দ্বারা শম্বর-দৈত্য নিহত হবার বারো বছর পরে, একদিন, জাম্ববতী, রুক্মিনীর গর্ভজাত আমার পুত্র প্রদ্যুম্ন, চারুদেষ্ণ, সুচারু, চারুবেশ, যশোধর, চারুশ্রবা, চারুযশা, শম্ভূ প্রভৃতি পুত্রদের দেখে,পুত্র অভিলাষী হয়ে, আমার কাছে এসে বললো হে নাথ, আমাকে একজন আপনার মতো গুণবান, পরমসুন্দর, মহাবল পরাক্রান্ত পুত্র দেন করুন। এই ত্রিলোকে, আপনার অসাধ্য কিছু নেই, আপনি ইচ্ছে করলে লোকসমূদায় সৃষ্টি করতে পারেন। এর আগে আপনি বার বছর কঠোর ব্রত অনুষ্ঠান করে ভগবান পাশুপতির আরাধনা করেছিলেন।
No comments:
Post a Comment